কুয়াকাটা সৈকতের বাঁধরক্ষার জন্য বাঁধের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের প্রতিবাদে তিন শতাধিক পরিবার সড়ক অবরোধ করে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছে।
শনিবার (১২ নভেম্বর) সকাল থেকে বেড়িবাঁধ পার্শ্ববর্তী হোসেনপুর ও পাঞ্জুপাড়া গ্রামের শতশত নারী পুরুষ এ বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করে।
এ সময় তারা পুনর্বাসন ছাড়া উচ্ছেদ বন্ধের দাবি জানিয়ো কুয়াকাটা-ঢাকা সড়কের কুয়াকাটা চৌরাস্তায় অবস্থান নেয়। পুলিশ বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু গ্রামবাসীরা উচ্ছেদ বন্ধ করার দাবিতে সড়কে বসে বিক্ষোভ শুরু করে। এতে কুয়াকাটা থেকে সকাল সোয়া ১০টার পর সব ধরনের বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
বিক্ষোভকারীরা জানান, তারা অর্ধশত বছর ধরে বাঁধের দুই পাশে বসবাস করে আসছেন পরিবার নিয়ে। কিন্তু শুক্রবার রাতে হঠাৎ করে এ জায়গা থেকে সরে যেতে বলে প্রশাসন। এখন তারা কোথায় যাবেন।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতের পূর্বপাশে দুই কিলোমিটার এলাকার ৭৩ একর ভূমির মালিকানা দাবি নিয়ে সরকারের সঙ্গে মনির আহম্মেদ ভূঁইয়া গং, সিরাজুল ইসলাম মিয়াজী গংদের সঙ্গে ১৯৭২ সাল থেকে মামলা চলে আসছে। এ মামলায় কখনও সরকার পক্ষ আবার কখনও পাবলিকের পক্ষে রায় দেন আদালত। ৫০ বছর ধরে এ মামলা চলে আসছিল। গত ১০ নভেম্বর পটুয়াখালী জেলা জজ আদালত নিষেধাজ্ঞা স্থাগিত করলে জেলা প্রশাসক সরকারি জমিতে থাকা বাড়িঘর ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদের উদ্যোগ নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় জেলা প্রশাসন উচ্ছেদ কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
জানা গেছে, কুয়াকাটা সমুদ্রসৈকতকে আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন নগরীতে রূপান্তরের লক্ষ্যে সরকার মেঘা প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এই মেঘা প্রকল্প বাস্তবায়নে মহা উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রনয়নে কাজ করছে সরকার। এরই ধারাবাহিকতায় কুয়াকাটায় বেড়ীবাধেঁর বাইরের সকল স্থাপনা সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ হাতে নেয়।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শংকর চন্দ্র বৈদ্য জানান, কুয়াকাটায় বেড়িবাঁধের ৭৩ একর খাস জমি উচ্ছেদে তাদের অভিযান শুরু হয়েছে। বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ কাজ শুরু হবে। তাই সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হচ্ছে। আর যারা এখন খাস জায়গায় অবস্থান নিয়েছে তাদের নিজ উদ্যোগে সব স্থাপনা সরিয়ে নিতে কিছু সময় দেওয়ায় বিক্ষোভকারীরা সড়ক থেকে সরে গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে ও সড়কে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়েছে।