সালাহউদ্দিন আহমেদ ও তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ
ঢাকা: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিন আহমেদের জামিন আবেদন শুনানির অপেক্ষায় রয়েছেন স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। শুক্রবার (২৯ মে) মেঘালয়ের শিলং আদালতে জামিন আবেদন শুনানির পর পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন তিনি।
এদিকে শিলং নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সেস (নেগ্রিমস)-এ পুলিশি পাহারায় চিকিৎসাধীন সালাহউদ্দিন আহমেদের সঙ্গে শনিবারও দেখা করেছেন হাসিনা। তবে এদিন মিডিয়ার সঙ্গে কোনো কথা বলেননি তিনি।
ঢাকায় অবস্থানরত বিএনপির চেয়ারপারসনের প্রেসউইং কর্মকর্তা শায়রুল কবীর খান শনিবার (২৩ মে) রাতে এসব তথ্য জানান।
এর আগে শুক্রবার (২২ মে) ভারতের মেঘালয় রাজ্যের শিলং আদালতে সালাহউদ্দিন আহমেদ জামিন আবেদন করেন। আবেদন আমলে নিয়ে আগামী শুক্রবার (২৯ মে) শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত। তবে শারীরিক অসুস্থতার কারণে শনিবার সালাহউদ্দিনকে আদালতে হাজির করা হয়নি।
শুক্রবার শিলংয়ের প্রথম শ্রেণীর বিচারিক আদালতে সালাহউদ্দিনের জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার স্ত্রী হাসিনা আহমেদ। আদালত তা গ্রহণ করে ২৯ মে শুনানির দিন ধার্য করেন।
শিলং আদালতের একজন সরকারি কৌঁসুলি জানিয়েছেন, জামিন আবেদনে হাসিনা আহমেদ উল্লেখ করেছেন যে, তার স্বামী সালাহউদ্দিন চলতি বছরের ১০ মার্চ নিখোঁজ হন। সাদা পোশাকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় অপহরণের অভিযোগে এফআইআর করতে গেলে পুলিশ তা নথিভুক্ত করতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরে তিনি এ ঘটনায় বাংলাদেশের হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন। আদালত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে প্রতিমাসে সালাহউদ্দিনের ঘটনার তদন্তের অগ্রগতি জানানোর নির্দেশ দেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ চিকিৎসাধীন থাকায় মেঘালয় পুলিশ প্রকৃতপক্ষে সালাহউদ্দিনের ঘটনার কোনো তদন্ত করতে পারেনি। এই অবস্থায় তার জামিন পাওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন ওই সরকারি কৌঁসুলি।
আবেদনে আরও বলা হয়েছে, সালাহউদ্দিন আহমেদ গুরুতর অসুস্থ। সুস্থ হওয়ার জন্য বিদেশে উন্নত চিকিৎসার প্রয়োজন তার।
সালাহউদ্দিনের পাসপোর্ট ও বিদেশে বিশেষ করে সিঙ্গাপুরে চিকিৎসা নেওয়ার ভিসাও আবেদনের সঙ্গে আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
অনির্দিষ্টকালের অবরোধের মধ্যে গত ১০ মার্চ ঢাকার উত্তরার একটি বাসায় আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় নিখোঁজ হন সালাহউদ্দিন আহমেদ। এর পর দুই মাস দুই দিন পর গত ১২ মে ভারতের মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলংয়ের মিমহ্যানস্ হাসপাতাল থেকে স্ত্রী হাসিনা আহমেদকে ফোন দিয়ে জানান তিনি বেঁচে আছেন।
এর পর শিলং পুলিশ সংবাদমাধ্যমকে জানায়, ১১ মে সকালবেলা শিলংয়ের গলফ লিংক এলাকা থেকে সালাহউদ্দিন আহমেদকে আটক করা হয়। এ সময় তার সঙ্গে ভ্রমণের কাগজপত্র না থাকায় স্থানীয় থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিধ্বস্ত চেহারা ও অসংলগ্ন কথাবার্তায় সন্দেহ হলে তাকে মেঘালয় ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথ (মিমহ্যানস) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর পর দুই দফায় হাসপাতাল পরিবর্তন করে প্রথমে শিলং সিভিল হাসপাতাল ও সর্বশেষ শিলং নর্থ ইস্টার্ন ইন্দিরা গান্ধী রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথ অ্যান্ড মেডিক্যাল সায়েন্সেস (নেগ্রিমস) ভর্তি করা হয়।
এদিকে স্বামীর সন্ধান পাওয়ার পাঁচ দিন পর ১৭ মে শিলংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দেন হাসিনা আহমেদ। পরের দিন স্বামীর কাছে পৌঁছে আইনি প্রক্রিয়া শুরু করেন তিনি। সর্বশেষ শুক্রবার স্বামীর জামিনের জন্য আদালতে আবেদন করেন হাসিনা আহমেদ।