খুলনা: তিন দফা দাবিতে চতুর্থ দিনের মতো খুলনা বিভাগে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। পরিবহন মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ এ ধর্মঘট পালন করছে।
দাবিগুলো হচ্ছে- সোহাগ পরিবহনের আটক চালক ও হেলপারদের মুক্তি, পরিবহনে ডাকাতির ঘটনায় মামলা এবং মামলা না নিয়ে হয়রানি করায় সংশ্লিষ্ট ওসিকে প্রত্যাহার।
দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মঙ্গলবার থেকেই দক্ষিণাঞ্চলে ঢাকাগামী পরিবহনে ধর্মঘট শুরু হয়। আর শুক্রবার থেকে শুরু হয় আন্তঃজেলা রুটগুলোতে। এদিকে, টানা চারদিন ধরে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন হাজার হাজার যাত্রী।
শনিবার (২৩ মে) সকালে খুলনা বাস-মিনিবাস কোচ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন সোনা জানান, চলমান সংকট নিরসনের লক্ষ্যে শুক্রবার রাতে সরকারি প্রশাসন ও পরিবহন নেতাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উভয় পক্ষের অনড় অবস্থানের কারণে সংকটের সমাধান হয়নি।
তিনি জানান, পুলিশের হাতে আটক দুই পরিবহন শ্রমিকের মুক্তি না হওয়ায়, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলে পরিবহন ধর্মঘট অব্যাহত রয়েছে। দাবি আদায়ে আগামী ২৫ মে পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়েছে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে সারাদেশে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হবে।
শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, ধর্মঘটের কারণে সোনাডাঙ্গা খুলনা বিভাগীয় বাস টার্মিনাল, রয়েলের মোড় ও শিববাড়ি বাস কাউন্টার থেকে ঢাকাগামী কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। এতে খুলনা থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানের উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া সাধারণ যাত্রীদের চরম দুর্ভোগের মুখে পড়তে হয়েছে।
এদিকে পরিবহন ধর্মঘটের কারণে খুলনা রেল স্টেশনে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। টিকিট না পাওয়ায় অনেকে দাঁড়িয়ে গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন।
সোনাডাঙ্গা বাস টার্মিনালে কথা হয় ঝিনাইদহগামী যাত্রী আব্দুল খালেকের সঙ্গে। তিনি বলেন, ধর্মঘটে গাড়ি ছাড়ছে না। যে কারণে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেলে পাঁচগুন বেশি ভাড়া দিয়ে যেতে হচ্ছে।
বাংলাদেশ পরিবহন সংস্থা যশোরের সভাপতি আজিজুল আলম মিন্টু জানান, সোমবার রাতে ঢাকার গাবতলী থেকে সোহাগ পরিবহনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত একটি বাস বেনাপোলের উদ্দেশ্যে ছেড়ে আসে। বাসটি ফরিদপুরে পৌঁছলে এতে ডাকাতি হয়। এর পর বাসের চালক সরাসরি মধুখালী থানায় গিয়ে গাড়ি থামান। এ সময় তিনি যাত্রীদের নিয়ে থানায় মামলা করতে যান। কিন্ত ওসি মামলা না নিয়ে টালবাহানা শুরু করেন। এরপর পুলিশ সুপারের নির্দেশে চালক আয়নাল ও চেকার রবিউল ইসলামকে আটক কর হয়।
তিনি আরো জানান, আটক দু’শ্রমিককে নিঃশর্ত মুক্তি, ফরিদপুরের পুলিশ সুপার ও মধুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে প্রত্যাহারে বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল। প্রশাসন তাদের দাবি না মানায় ঢাকাগামী পরিবহন ধর্মঘটের পাশাপাশি শুক্রবার থেকে আন্তঃজেলা পরিরহন ধর্মঘট পালন করা হচ্ছে।