আগামীকাল ২৬ অক্টোবর, একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য সাংবাদিক গিয়াস কামাল চৌধুরীর নবম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০১৩ সালের এই দিনে তিনি মারা যান।
১৯৩৯ সালের ২১ জুলাই চট্টগ্রামে জন্ম নেয়া এ সাংবাদিকের বাড়ি ফেনী জেলার সদর উপজেলার শর্শদিতে। কর্মজীবনে তিনি প্রখ্যাত সাংবাদিক, কলামিস্ট, সংবাদ বিশ্লেষক ও ভয়েস অফ আমেরিকার ঢাকা সংবাদদাতা হিসেবে সারাদেশে পরিচিত ছিলেন।
সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের স্বাধীনতার জন্য আজীবন লড়াকু গিয়াস কামাল চৌধুরী সাংবাদিক সমাজের প্রিয়ভাজন নেতা ছিলেন। বিভিন্ন সময়ে একাধিক মেয়াদে তিনি ডিইউজে, বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। তিনি কূটনীতিক হিসেবে লন্ডনস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশনে দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি মজলুম জননেতা মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানীর একনিষ্ঠ অনুসারী হিসেবে পকিস্তান আমলে গণতান্ত্রিক ও স্বায়ত্তশাসন অন্দোলনে অংশ নিয়ে বহুবার কারাবরণ করেছেন। ২০১১ সালে দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হলে তার স্মৃতিশক্তি ও স্বাভাবিক জীবন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তিনি পড়াশোনা করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে। এম এ, এলএলবি, জার্নালিজমে ডিপ্লোমা করেছেন।
১৯৬৪ সালে ইত্তেফাক গ্রুপ থেকে প্রকাশিত ‘ঢাকা টাইমস’ পত্রিকার মাধ্যমে গিয়াস কামাল চৌধুরীর সাংবাদিকতা শুরু হয়। পরে তিনি ইংরেজী দৈনিক মর্নিং নিউজ পত্রিকার আইন প্রদায়ক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পর তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় যোগদান করেন। কার্যত এখান থেকেই তার সাংবাদিকতার বিকাশ। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণসহ জাতীয় গণতান্ত্রিক ও পেশাজীবীদের অধিকার আদায়ের প্রতিটি আন্দোলনে তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন।
সাংবাদিক জীবনে গিয়াস কামাল চৌধুরী বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) ও ভয়েস অব আমেরিকাসহ দেশি-বিদেশি বিভিন্ন পত্রিকা ও সংবাদ সংস্থায় কাজ করেছেন।
১৯৮০-র এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় ভয়েজ অব আমেরিকা’র সংবাদদাতা গিয়াস কামাল চৌধুরীর প্রতিদিনের ঢাকার বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভরযোগ্য রিপোর্টের জন্য বাংলাদেশের সংগ্রামী মানুষ আকুল হয়ে থাকতো। তিনি শেষ জীবনে দৈনিক খবরপত্র পত্রিকার সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছিলেন। তিনি রাজনীতিবিদদের সাথে সমান তালে সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করেছেন। নিজের কর্মকে প্রতিষ্ঠিত করে ১৯৯২ সালে পেয়েছেন একুশে পদক।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি