ঘূর্ণিঝড়ের কোনও খবর পাচ্ছে না উপকূলের মানুষ

Slider বাংলার মুখোমুখি


ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে পটুয়াখালী উপকূলের বিভিন্ন এলাকা ডুবে গেছে। এরই মধ্যে অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন। তবে প্রায় ২০ ঘণ্টা ধরে বিদ্যুৎ না থাকায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন জেলার অধিকাংশ উপজেলার বাসিন্দারা। সবচেয়ে ভোগান্তিতে পড়েছেন উপকূলের মানুষজন। সারাদিন ঘূর্ণিঝড়ের কোনও তথ্য পাননি তারা। এমনকি ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ অবস্থাও জানা নেই তাদের।

সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাত ১০টা পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা যায়নি। এর আগে রবিবার (২৩ অক্টোবর) রাত ৩টা থেকে পটুয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলার সাংবাদিক ও স্থানীয় বাসিন্দারা।

তবে জেলা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে, পৌর শহরের কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। সারাদিন ঝোড়ো বাতাস ও ভারী বর্ষণে খুঁটি উপড়ে যাওয়ায় পল্লী বিদ্যুতের আওতাধীন জেলার অধিকাংশ উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু করা যায়নি। কখন বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হবে তাও বলতে পারছেন না বিদ্যুৎ অফিসের কর্মকর্তারা।

স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, রবিবার রাত ৩টার দিকে বিদ্যুৎ চলে যায়। এখন পর্যন্ত আসেনি। এতে মোবাইলে নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিদ্যুতের অভাবে লোকজন মোবাইল ফোন চার্জ ও টিভি দেখতে না পারায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন অবস্থায় আছে। ফলে ঘূর্ণিঝড় এবং উপকূলের বাসিন্দাদের খোঁজখবর নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

বাউফল উপজেলার সাংবাদিক জি এম মসিউর রহমান বলেন, রবিবার রাত ৩টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেছে। ২০ ঘণ্টা পার হয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। বাউফল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখেছি, রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে অসুবিধা হচ্ছে। আমাদের মোবাইলের চার্জ ফুরিয়ে গেছে এবং নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে। কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।

গলাচিপা উপজেলার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. সুলতান হাওলাদার বলেন, রাত থেকে পুরো এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন। মোবাইলে নেটওয়ার্ক পাওয়া যাচ্ছে না। ফলে ঘূর্ণিঝড়ে কোথায় কি হচ্ছে কিছুই জানতে পারছি না। আত্মীয়-স্বজন, এমনকি পাড়া-প্রতিবেশীর সঙ্গেও যোগাযোগ করতে পারছি না। টিভি দেখতে পারছি না, সম্পূর্ণ যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন আমরা। ফলে ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ অবস্থার খবরও জানি না।

কলাপাড়া উপজেলার বাসিন্দা মো. নয়ন মিয়া বলেন, এই মুহূর্তে ঘূর্ণিঝড়ের সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে আমাদের জানাটা জরুরি। কিন্তু বিদ্যুৎ না থাকায় আমরা যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। নেটওয়ার্ক সমস্যা দেখা দিয়েছে, চার্জ না থাকায় মোবাইল বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে আমাদের কাছে ঘূর্ণিঝড়ের কোনও খবর নেই।

কলাপাড়া উপজেলার সাংবাদিক ইমরান হোসেন বলেন, জেলার অধিকাংশ এলাকা বিদ্যুৎহীন। মোবাইল ও ল্যাপটপ বন্ধ হয়ে গেছে। নেটওয়ার্ক সমস্যার কারণে কোথাও কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না।

পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার শাহ মো. রাজ্জাকুর রহমান বলেন, ঝোড়ো বাতাস ও ভারী বর্ষণে বিভিন্ন জায়গায় বিদ্যুতের লাইনের ওপর গাছপালা উপড়ে পড়েছে। বেশ কিছু স্থানে বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়েছে। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু থাকলে অনেক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এজন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়েছে। কখন পর্যন্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ চালু হবে তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *