ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলীয় জেলাগুলোতে রাতভর হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টিপাত হয়েছে। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বৃষ্টি ও বাতাসের গতি বাড়ছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে সিত্রাং মোকাবিলায় সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে প্রশাসন।
খুলনার কয়রা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রোকনুজ্জামান বলেন, ‘সাগর আরও বেশি বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠায় মোংলায় সাত নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। এর পরই ঝুঁকিপূর্ণ লোকজনকে আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে মাইকিং করা হচ্ছে। কয়রায় ১০৮টি আশ্রয় কেন্দ্র রয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ সবাইকে সন্ধ্যার আগেই আশ্রয় কেন্দ্রে যেতে হবে।’
বাগেরহাটের মোংলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘মোংলার ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার লোকজনকে দুপুরের খাবার খেয়েই আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। তাদের সন্ধ্যার আগেই আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে জোর তাগিদ দেওয়া হচ্ছে। কারণ সিত্রাং ঝড়টি রাত ১২টার মধ্যে আঘাত হানার আশঙ্কা রয়েছে।’
ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে মধ্যরাত থেকে উপকূলে বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। সেই সঙ্গে বইছে দমকা হাওয়া। খুলনা মহানগরের বিভিন্ন এলাকার ড্রেন ও রাস্তা পানিতে একাকার হয়ে গেছে। সিত্রাংয়ের প্রভাবে উপকূলের নদীগুলোতে পানির চাপ বেড়েছে। এর ফলে কয়রা ও সাতক্ষারীর আশাশুনির বিভিন্ন এলাকায় বাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। ধসে গেছে কয়রার হরিণখোলা বেড়িবাঁধ। এতে আতঙ্ক রয়েছেন উপকূলবাসী।
খুলনা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘সব উপজেলা ইউএনওকে সার্বিক পরিস্থিতিতে জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আশ্রয় কেন্দ্র, মেডিক্যাল টিম, পর্যাপ্ত শুকনো খাবার ও স্বেচ্ছাসেবক টিম প্রস্তুত রয়েছে।’
খুলনা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ বলেন, ‘উপকূলের দিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। মোংলা বন্দর থেকে এটি ৫২৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। মোংলা বন্দরকে ৭ নম্বর বিপদ সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে।’