বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে যোগ দিতে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে আসা নেতাকর্মীরা কোথাও স্থান না পেয়ে সমাবেশস্থলেই জমায়েত হতে শুরু করেছেন। শুধু তাই নয়, দলীয় কার্যালয়ের সামনেও অবস্থান নিয়েছেন তারা।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) রাত ৮টার পরেই কেডি ঘোষ রোড এলাকায় কানায় কানায় মানুষে পূর্ণ হয়ে যায়। অনেকে রাতে রাস্তায় অবস্থান নেওয়ার জন্য মাদুর, বালিশ, পেপার সঙ্গে করে নিয়ে এসেছেন। এদিকে ডাকবাংলা মোড়ের সোনালী ব্যাংক চত্বরে চলছে মঞ্চ তৈরির কাজ।
বিএনপি নেতারা জানান, সমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে। নেতাকর্মীরা রাতে সেখানেই অবস্থান করবেন। এখানেই কাল দুপুর ২টায় শুরু হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ।
শুক্রবার রাতে দলীয় কার্যালয়ে সামনে অবস্থান নেওয়া শরণখোলা উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব আলামিন খান জানান, বুধবার রাতে খুলনায় রওনা হন তারা। পথে তাদের ওপর হামলা চালালে অনেকে আহত হন। অনেক পথ ঘুরে তারা খুলনায় পৌঁছেছেন।
সাতক্ষীরা থেকে আসা যুবদলকর্মী সোহরাব হোসেন জানান, বাস বন্ধ থাকায় বিভিন্ন ছোট ছোট যানবাহনে অল্প অল্প করে তারা ৬ জন খুলনা এসেছেন। রাতে দলীয় কার্যালয়ের নিচে অথবা সমাবেশস্থলে থাকবেন।
খুলনা মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক শফিকুল আলম মনা জানান, বাস-লঞ্চ বন্ধের পর পথে পথে নেতাকর্মীদের বাঁধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সব বাধা উপেক্ষা করে গণতন্ত্রকামী মানুষের জনস্রোত এখন খুলনামুখী।
বিএনপি নেতা মিজানুর রহমান মিল্টন জানান, গণসমাবেশ যোগ দিতে আসার পথে নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। পাড়া মহল্লায় সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা মহড়া দিচ্ছে, তবুও বিএনপির নেতাকর্মীদের থামানো যাবে না। সমাবেশ জনসমুদ্রে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে দলীয় কার্যালয় ও আশপাশে সামনে তিল ধারণের জায়গা নেই। সে কারণে নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থলেই অবস্থান নিয়েছেন।
‘খুলনা জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি’ বুধবার দুপুরে এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ‘সড়ক ও মহাসড়কে অবৈধভাবে নছিমন, করিমন, মাহেন্দ্র, ইজিবাইক ও বিআরটিসির গাড়ি চলাচল করছে। আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে প্রশাসন যদি সড়কে ওই অবৈধ যান চলাচল ও কাউন্টার বন্ধ না করে, তাহলে পরবর্তী দুই দিন ২১ ও ২২ অক্টোবর মালিক সমিতির সব রুটের গাড়ি বন্ধ থাকবে।’
জ্বালানি তেলসহ নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, পুলিশের গুলিতে দলের নেতা-কর্মীদের হত্যার প্রতিবাদে এবং নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনের দাবিতে সারা দেশে বিভাগীয় পর্যায়ে গণসমাবেশ শুরু করেছে বিএনপি। ১২ অক্টোবর চট্টগ্রামে সমাবেশের পর ১৫ অক্টোবর ময়মনসিংহে সমাবেশ হয়েছে।
২২ অক্টোবর খুলনার পর ২৯ অক্টোবর রংপুরে সমাবেশ হওয়ার কথা। এরপর ৫ নভেম্বর বরিশালে, ১২ নভেম্বর ফরিদপুরে, ১৯ নভেম্বর সিলেটে, ২৬ নভেম্বর কুমিল্লায়, ৩ ডিসেম্বর রাজশাহীতে এবং ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ হবে।
খুলনার সব রুটে বাস চলাচল বন্ধের ঘোষণার পর কোনো প্রতিবন্ধকতাই বিএনপির খুলনা বিভাগীয় সমাবেশের জনস্রোতকে রুখতে পারবে না বলে হুঁশিয়ারি জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি দলের গুলশান কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, আমরা কোনো প্রতিবন্ধকতা, কোনো হরতাল মানব না, আমরা কোনো কারফিউও মানব না, আমরা সেখানে (সমাবেশ) উপস্থিত হবই।