ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) কারচুপি করা সম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন। আজ বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নির্বাচন কমিশন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভা শেষে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ মন্তব্য করেন তিনি।
সাবেক নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, সিসি ক্যামেরা নিয়ে বিতর্ক আছে। সেটা ভালো হোক, মন্দ হোক। ইভিএম যেখানে ব্যবহার হচ্ছে, ব্যবহার করুন (সিসি ক্যামেরা)। ব্যালট পেপার নিয়ে গেলেও সেটা ফাইন্ড আউট করা সম্ভব। কিন্তু ইভিএমে সূক্ষ্ম কারচুপি সম্ভব।’
ইভিএমে কারচুপির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘বাইরে কোনো হইচই নাই, কিছু নাই, অথচ ভেতরে কী হচ্ছে, গাইবান্ধায় যেটা আমরা দেখলাম। অন্য সিস্টেমে হলে (ব্যালট পেপারে কারচুপি) বাইরেও হইচই হতো। সেটা আরও ভালো করে দেখতে পারতেন। কারণ কেন্দ্র ক্যাপচার করতে তো লোকবল লাগবে।’
কমিশনে নিজেদেরে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘পাঁচ বছর আমাদের যে অভিজ্ঞা হয়েছিল, সেটা ইউনিক। আর কোনো কমিশন সেটা পারেনি। প্রথমেই আমি যেটা বলেছি, গাইবান্ধা-৫ উপনির্বাচনে যে পদক্ষেপ নিয়েছে আমি তাদের স্বাগত জানিয়েছি। এই পর্যন্ত ঠিক আছে, পরের ধাপগুলোতে যেন স্লিপ না করেন।’
এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, ‘যদি করেন, তাহলে জাতির কাছে অন্যরকম একটা মেসেজ যাবে, যে আপনারা এইটুকু দেখানোর জন্য করলেন। বাকিটুকু করলেন না। এজন্য আইন আপনাদের শক্ত অবস্থানে যেতে বলেছে, প্লিজ ডু ইট। আর নির্বাচন কমিশন যদি মনে করে পরিবেশ ঠিক নেই, তাহলে নির্বাচন বন্ধ করতে পারেন। কোথাও কোনো বাধা নেই। কারণ সংবিধানের ১১৯ ধারা বলে আপনার কাজ হলো অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করা। বাকিটা আপনাদের চিন্তা-ভাবনা করতে হবে।’
গাইবান্ধার উপনির্বাচনে ইসির পদক্ষেপের প্রশংসা করে সাবেক এ নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘বাংলাদেশে কোনো কমিশন এর আগে এই কাজটি করতে পারেনি। ৯৪ সালে যদি এটা করা হতো তাহলে আজকের পরিস্থিতি অন্যরকম হতো। আপনারা নিজস্ব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বা যাদের দিয়ে নির্বাচন করবেন তাদের আত্মবিশ্বাসে আনতে হবে। বরিশালে যেটা ভাইরাল হতে দেখেছি, এখানে ইউএনওকে প্রকেটশন দেওয়া উচিত নির্বাচন কমিশনের।’
ইসির মতবিনিময় সভায় সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) আব্দুর রউফ, কে এম নূরুল হুদা, কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ, সাবেক নির্বাচন কমিশনার এম সাখাওয়াত হোসেন, রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম, সাবেক ইসি সচিব মোহাম্মাদ সাদিক, মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ, সিরাজুল ইসলাম, হেলাল উদ্দীন আহমেদ এবং ইসির সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলী ও মোখলেছুর রহমান অংশ নেন। এ সময় বর্তমান সিইসি, অন্য নির্বাচন কমিশনারসহ ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।