কবিরা গুনাহ থেকে মুক্ত হওয়ার উপায়

Slider লাইফস্টাইল


গুনাহ দুই প্রকার। এক. সগিরা বা ছোট গুনাহ, দুই. কবিরা বা বড় গুনাহ। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, এক জুমা থেকে অন্য জুমা, এক রমজান থেকে অন্য রমজান তাদের মধ্যবর্তী গুনাহের কাফফারা (ক্ষতিপূরণ) যদি সে কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকে।’ -(সহিহ মুসলিম, হাদিস : ২৩৩)

গুনাহ মাফের বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘নিশ্চয় নেক কাজ গুনাহ মিটিয়ে দেয়। ’ (সুরা : হুদ, আয়াত : ১১৪)

কবিরা গুনাহের জন্য তাওবা করা আবশ্যক

কোরআনের আয়াত ও হাদিসের মাধ্যমে বুঝা যায়, ফরজ ও নফল ইবাদত, পাপ কাজের ব্যাপারে আত্মসংযম আর কল্যাণমূলক কাজের মাধ্যমে ছোট ছোট গুনাহগুলো মাফ হয়ে যায়। তবে কবিরা বা বড় গুনাহের জন্য আল্লাহর কাছে তওবা করা আবশ্যক।

পবিত্র কোরআনে বর্ণিত হয়েছে, ‘তোমাদের যা (পাপ) করতে নিষেধ করা হয়েছে তার মধ্যে যা গুরুতর (কবিরা) তা থেকে বিরত থাকলে তোমাদের লঘুতর পাপগুলো মোচন করব এবং তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব।’ -(সুরা : নিসা, আয়াত : ৩১)

পাপের পুনরাবৃত্তি না করার অঙ্গীকার

অতএব নেক আমল বাড়ানো, বেশি বেশি তওবা করা উচিত। কারণ, তওবাই কবিরা গুনাহ মাফের প্রধান উপায়। আলেমরা বলেন, অতীতের পাপের জন্য অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে পাপের পুনরাবৃত্তি না করার অঙ্গীকারই তওবা। আল্লাহ তওবাকারীকে পছন্দ করেন।

কোরআনের বিভিন্ন আয়াতে তাওবাকারীর পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,

‘হে মুমিনরা! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা করো, খাঁটি তাওবা; আশা করা যায় তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের পাপ মোচন করবেন এবং তোমাদের এমন জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যার পাদদেশে নহরগুলো প্রবাহিত।’ -(সুরা : তাহরিম, আয়াত : ৮)

হাদিসে কবিরা গুনাহের বর্ণনা

কবিরা গুনাহেরও নির্দিষ্ট কোনো সংখ্যা বলা যায় না। হজরত ইবনে আব্বাস রা.-কে একবার কবিরা গুনাহের সংখ্যা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেছেন, কবিরা গুনাহ প্রায় ৭০টি (তাখরিজু শরহিস সুন্নাহ ১/৮৭)

তবে একাধিক হাদিসে সাতটি কাজকে কবিরা গুনাহ বলা হয়েছে, ১. শিরক কর, ২. মা-বাবার অবাধ্য হওয়া, ৩. অন্যায়ভাবে হত্যা করা, ৪. সুদ খাওয়া, ৫. এতিমের সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করা, ৬. যুদ্ধের ময়দান থেকে পলায়ন করা, ৭. হিজরতের পর পুনরায় কুফরের ভূমিতে ফিরে আসা। – (সহিহ বুখারি : ২৭৬৬, সহিহ মুসলিম : ৮৯)

জান্নাতের প্রতিশ্রুতি

এগুলো থেকে বেঁচে থাকতে পারলে জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। একটি কবিরা গুনাহই জাহান্নামে নেয়ার জন্য যথেষ্ট। বর্ণিত হয়েছে, যে গুনাহ তার কর্তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবে সেটাই কবিরা গুনাহ। -(ফাতহুল বারি ১২/১৯১)

দুনিয়াবী ক্ষতি

পরকালে জাহান্নাম ছাড়াও কবিরা গুনাহের দুনিয়াবী অনেক ক্ষতি রয়েছে। তন্মধ্যে কিছু হচ্ছে, ১. রিজিক কমে যায়; ২. ইলম থেকে বঞ্চিত হতে হয়; ৩. হায়াতে বরকত কমে যায়। কিছু দিন পর গুনাহের প্রতি ঘৃণা অন্তর থেকে চলে যায়; ৪. সবচেয়ে ভয়াবহ ক্ষতি হচ্ছে, ঈমানহারা হয়ে মৃত্যুর সম্ভাবনা রয়েছে, (আল্লাহ আমাদের রক্ষা করুন)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *