যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে টালমাটাল অবস্থায় পড়েছেন লিজ ট্রাস। লড়ছেন প্রধানমন্ত্রিত্ব পদ বাঁচাতে। এরই মধ্যে তিনি জানিয়েছে দিয়েছেন, তিনি পদত্যাগ করছেন না এবং টোরিদের পরবর্তী সাধারণ নির্বাচনে নেতৃত্ব দেবেন।
এ ছাড়া দেশটির নতুন অর্থমন্ত্রী জেরেমি হান্ট বাজারকে স্থিতিশীল করার জন্য লিজ ট্রাসের পরিকল্পনার প্রায় সবকটি বাতিল করার পর, প্রধানমন্ত্রী নিজেই ভুল করার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে লিজ ট্রাস বলেছেন, ‘আমি দায় স্বীকার করতে চাই এবং ভুলের জন্য দুঃখিত।’ সাক্ষাৎকারে ব্রিটেনের নতুন এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি কাজ করতে চেয়েছিলাম, করের সমস্যা মোকাবিলা এবং জ্বালানি বিল নিয়ে সাহায্য করতে, কিন্তু আমরা খুব বেশি এবং খুব দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলি। এই সময় তিনি স্বীকার করেছেন, তার এক মাসের সামান্য বেশি প্রিমিয়ারশিপ নিখুঁত ছিল না।
লিজ তার নির্বাচনী প্রচারে কর ছাড়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এর ওপর অনেকটা ভর করেই তিনি দেশটির কনজারভেটিভ পার্টির প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী হন। কিন্তু ক্ষমতায় এসে সেই প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছেন। মূলত এর জেরেই তার প্রধানমন্ত্রিত্ব পদ এখন নড়বড়ে।
গত শুক্রবারেই অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ারতেংকে বরখাস্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ১০নং ডাউনিং স্ট্রিটে লিজ ট্রাসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কাওয়াসি। এর পর দায়িত্ব ছাড়ার কথা জানান।
সিএনএন বলছে, কাওয়াসি কোয়ারতেং বরখাস্ত হওয়ার তিন সপ্তাহ আগে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে সংক্ষিপ্ত বাজেট ঘোষণা করেন। ওই বাজেটে কর ছাড়ের ছড়াছড়ি থাকায় বেশ বিতর্কের জন্ম দেয়। পুঁজিবাজারেও অস্থিরতা শুরু হয়। এক পর্যায়ে মার্কিন ডলারের বিপরীতে যুক্তরাজ্যের মুদ্রা পাউন্ড মূল্যমান হারিয়ে কয়েক দশকের সর্বনিম্ন অবস্থানে চলে যায়।
এরপর ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের হস্তক্ষেপ, সংক্ষিপ্ত বাজেট বাতিলের গুঞ্জন ও অর্থমন্ত্রীকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে-এমন খবরে বাজারের কিছুটা স্থিতিশীলতা ফিরে আসে।
তবে কাওয়াসি কোয়ারতেংকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েও বিপদ কাটেনি ট্রাসের। কেননা ট্রাসের কর ছাড়ের প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন দেখা গিয়েছিল ওই বাজেটে। তবে একপ্রকার বাধ্য হয়ে এখন ধীরে ধীরে সেই অবস্থান থেকে সরে আসছেন ট্রাস। এজন্য সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্টকে অর্থমন্ত্রী করেছেন তিনি।