বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি) ডিজিটাল নিরাপত্তা সেলের নিয়মিত নজরদারির অংশ হিসেবে সম্প্রতি ৩৩১টি অনলাইন জুয়ার সাইট বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নেটওয়ার্ক থেকে বন্ধ করা হয়েছে।
এছাড়া আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান তথা সার্চ ইঞ্জিন ‘গুগল’ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অনলাইন জুয়া বা বাজি সংক্রান্ত ১৫০টি গুগল অ্যাপস বন্ধের জন্য রিপোর্ট করা হলে ইতোমধ্যে গুগল কর্তৃপক্ষ প্লে-স্টোর থেকে ১৪টি অ্যাপস বন্ধ করেছে। অবশিষ্ট অ্যাপস বন্ধ করার জন্য যাচাই-বাছাইসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিচ্ছে বলে জানিয়েছে বিটিআরসি।
সোমবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে বিটিআরসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে।
বিটিআরসি জানায়, ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে জুয়া খেলার ওয়েবসাইট ও গুগল অ্যাপসের প্রচার এবং অনলাইন জুয়া সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ দেওয়ার ২৭টি ফেসবুক লিংক এবং ৬৯টি ইউটিউব লিংক বন্ধের জন্য রিপোর্ট করা হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে ১৭টি ফেসবুক লিংক ও ১৭টি ইউটিউব লিংক বন্ধ করা হয়েছে এবং অবশিষ্ট লিংকসমূহ বন্ধের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
অ্যাপের নিয়ম অনুযায়ী, খেলার চিপস কিনতে প্রয়োজন পড়ে নগদ অর্থ, ক্রেডিট বা ডেভিড কার্ড। ক্রেডিট বা ডেভিড কার্ড সহজলভ্য হওয়ায় অনেকেই ঝুঁকে পড়েছে অনলাইন জুয়ার দিকে। কয়েকটি অপরাধী চক্র এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে দেশ থেকে কোটি কোটি টাকা পাচার করছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মোবাইল অ্যাপ ছাড়াও অপরাধীরা বিভিন্ন ওয়েবসাইট/ডোমেইনের মাধ্যমে সরাসরি অনলাইন গেইম/জুয়া খেলায় অংশগ্রহণ করে থাকে এবং এজন্য দেশে এবং বিদেশে হোস্টিং করা বিভিন্ন ওয়েবসাইটের মাধ্যমে প্রথমে অ্যাকাউন্ট খুলে নিবন্ধন করা হয়। তারপর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ দেশীয় কিংবা আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য কার্ড বা অন্য কোনো মাধ্যমে জমা দিয়ে জুয়ায় অংশ নিতে হয়। অনলাইন জুয়াড়িরা বিকাশ, রকেট, নগদসহ বিভিন্ন মোবাইল ব্যাংকিংয়ে টাকা আদান-প্রদান করে।
প্রচলিত আইন অনুযায়ী দেশে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও সম্প্রতি বিভিন্ন ওয়েবসাইট ও অ্যাপসের মাধ্যমে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ফুটবল, ক্রিকেট ও টেনিস খেলাসহ বিভিন্ন লীগ ম্যাচকে ঘিরে প্রতি মুহূর্তে অবৈধ অনলাইন জুয়া বা বাজি খেলা চলছে।
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর অব্যাহত অভিযানে প্রকাশ্যে এর হার কমলেও অনলাইনে এই খেলার প্রবণতা ক্রমেই বেড়ে চলেছে এবং এতে আসক্ত হচ্ছে তরুণ-তরুণীরা। রমরমা এ জুয়ায় নিঃস্ব হয়ে যাচ্ছে হাজারো মানুষ এবং তাদের পরিবার। অনলাইনে জুয়া বা বাজির ওয়েবসাইটে বিটিআরসির এই মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে এবং তা বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।