ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) বুয়েট ছাত্রলীগের নির্যাতনে শহিদ আবরার ফাহাদের তৃতীয় শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন।
শুক্রবার রাতে পৃথক সময়ে নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দেয় ছাত্রদল ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।
রাত ৮টার দিকে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবণ ও সাধারণ সম্পাদক সাইফ মাহমুদ জুয়েল স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতিতে প্রতিবাদ জানায় দলটি।
যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের বর্বর নির্যাতনে নিহত শহিদ আবরারের হত্যাকারীদের উত্তরসূরী ও আধিপত্যবাদের দোসররা বিনা উস্কানিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামীন মোল্লা, জাহিদ আহসান, সানাউল্লাহ ও পারভেজ মাহমুদসহ অনেক নেতাকর্মীকে পিটিয়ে আহত করে।
তারা বলেন, আরো গুরুতর বিষয় হচ্ছে, আহত নেতাকর্মীদের ঢাকা মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে নেয়ার পর সেখানেও ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা হত্যার উদ্দেশে নির্মমভাবে হামলা করে। মারধরের পর পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীদের বদলে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক আকরাম হোসেনসহ আক্রান্ত নেতাকর্মীদেরই গ্রেফতার করে নিয়ে যায়।
তারা আরো বলেন, বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকেই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ কখনোই এদেশে বিরোধী মত সহ্য করতে পারেনি। সন্ত্রাস, রাহাজানি ও অস্ত্রবাজির রাজত্ব কায়েম করে তারা শিক্ষাঙ্গনগুলোতে একচেটিয়া দখলদারিত্ব কায়েম রাখতে চায়। এ অপশক্তিকে প্রতিহত করতে তারা সকল সংগঠনকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার এবং ছাত্রলীগ নামক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
এদিকে হামলার নিন্দা জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ ও সাধারণ সম্পাদক শোভন রহমান এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি গণতান্ত্রিক কর্মসূচিতে এ ধরনের সন্ত্রাসী হামলা অত্যন্ত ন্যাক্কারজনক। এ হামলায় এখন পর্যন্ত অনেক আহত হওয়ার কথা সংবাদ মাধ্যমে এসেছে। এমনকি আহতদেরকে মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়ার পরও আরেক দফা হামলা চালানো হয়। এ সময় পুলিশ সদস্যরা হামলাকারীদের বদলে আহতদের মধ্য থেকেই কয়েকজনকে আটক করে নিয়ে যায়।
নেতৃবৃন্দ বলেন, ছাত্রলীগ এই পাশবিক হামলার ভেতর দিয়ে আবার প্রমাণ করলো, তারা সন্ত্রাসী সংগঠন। বিভিন্ন অজুহাতে তারা ভিন্ন মত ও সংগঠনের কর্মসূচিকে গায়ের জোরে দমন করতে চায়। প্রশাসনের অব্যাহত নির্লিপ্ততার কারণেই আজ ক্যাম্পাস ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভয়ারণ্যে পরিণত হয়েছে।
তারা আরো বলেন, ইতোপূর্বে যতবার ছাত্রলীগ কোনো সংগঠনের কর্মসূচিতে হামলা করেছে, প্রশাসন কখনোই তার বিচারের উদ্যোগ নেয়নি। বরং সন্ত্রাসীদের পক্ষেই সাফাই গেয়েছে বা নিরব থেকেছে। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা ও গণতান্ত্রিক পরিবেশ বজায় রাখার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের। সেই দায়িত্ব এড়িয়ে আজ প্রশাসন সন্ত্রাসীদের তোষণ করতে ব্যস্ত।
একইসাথে তারা প্রশাসনের এই নির্লজ্জ নির্লিপ্ততার নিন্দা জানান এবং জড়িত সন্ত্রাসীদেরকে চিহ্নিত করে অবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।