ছাত্রলীগের হামলায় নিহত বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের স্মরণসভাকে কেন্দ্র করে ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি আখতার হোসেনসহ ১৫ নেতাকর্মীকে আটকের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৭ অক্টোবর) বিকেলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখান থেকে তাদের আটক করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে জানান ছাত্র অধিকার পরিষদ সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা।
তিনি বলেন, বিকেল সাড়ে তিনটায় রাজু ভাস্কর্যে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের ব্যানারে আয়োজিত স্মরণ সভায় ছাত্রলীগের হামলায় আমাদের ১০-১৫ নেতাকর্মী আহত হলে তাদেরকে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি করায়। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা সেখানেও আমাদের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায়। এতে আমিসহ আমাদের অসংখ্য নেতাকর্মী আহত হই। ছাত্রলীগ আমাদের আটকে রাখলে পুলিশ এসে ঢাবি শাখার সভাপতিসহ ১৫ জনকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
এর আড়ে, শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে আবরার ফাহাদের তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় হামলার ঘটনা ঘটে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের উদ্যোগে আয়োজিত সভায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
এতে অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা হামলা চালিয়েছে বলে ঢাকা পোস্টকে জানান আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের আহ্বায়ক আখতার হোসেন।
আখতার হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী স্মরণ সভা শুরুর পরপরই প্রক্টরিয়াল টিমের উপস্থিতে আমাদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। আমাদের অন্তত ১০ জন আহত ও দুজন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা কোনো দলীয় ব্যানারে এ প্রোগ্রাম করিনি। আমরা প্রোগ্রাম করেছি আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের ব্যানারে। আমরা এই ন্যাক্কারজনক হামলায় ধিক্কার জানাই।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খানের নেতৃত্বে শতাধিক নেতাকর্মী হামলা চালায়। ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা সবাই ঢাবি শিক্ষার্থী কি-না জানতে চায়। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে ধাক্কাধাক্কি শুরু হয়। পরে তারা অতর্কিত হামলা চালায়। এ সময় ধাওয়া পাল্টা-ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। স্মরণ সভার জন্য আনা অর্ধশতাধিক চেয়ার ভাঙচুর করা হয় ও ব্যানার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।
এ বিষয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান বলেন, যারা এখানে এসেছে তারা সবাই বহিরাগত। ঢাবি প্রশাসন ও শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা চায় না। আমরা হামলা করিনি। আয়োজকরা ঢাবি শিক্ষার্থী কিনা জানতে চাইলে তারা আমাদের ওপর হামলা চালায়।
হামলায় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি এম. এম মহিন উদ্দিন, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুব খান, সাংগঠনিক নাজিম উদ্দীন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় সম্পাদক আল আমিন রহমান, উপ-দপ্তর সম্পাদক শিমুল খান, আব্দুর রাহিম, জহুরুল হক হল ছাত্রলীগের সভাপতি কামাল উদ্দীন রানা, সাধারণ সম্পাদক রুবেল হোসেনসহ কেন্দ্রীয়, ঢাবি ও হল শাখা ছাত্রলীগের কয়েকশ নেতাকর্মী অংশ নেয়।