স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর জন্য সরকার কূটনৈতিক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা বসবাস করায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাদের কারণে ক্যাম্প ও আশপাশের এলাকায় বিভিন্ন অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।
রোববার (২ অক্টোবর) দুপুরে কক্সবাজারের টেকনাফে ‘আইওএম’ নির্মাণাধীন ১০০ কমিউনিটি ক্লিনিকের মধ্যে প্রথম ১২টি নবনির্মিত ক্লিনিকের উদ্বোধন শেষে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
এসময় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রাণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসাইন হাওলাদার, মহাপরিচালক অধ্যাপক আবুল বশর মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, অতিরিক্ত সচিব জাহাঙ্গীর আলম, ‘আইওএম’ বাংলাদেশ মিশনের প্রধান আব্দুস সাত্তার এসওয়েভ ও কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদসহ স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গাদের কারণে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা ব্যাহত হচ্ছে। বর্তমান সরকার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর চিকিৎসা সেবাকে নিশ্চিত করতে চায়।
মিয়ানমার থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি স্থানীয়দের স্বাস্থসেবা নিশ্চিত করার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী আরও বলেন, ১১ লাখের কাছাকাছি রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়া দেশের সর্বদক্ষিণের এই অংশে মৌলিক অবকাঠামো এবং পরিষেবাগুলো আগে থেকেই জাতীয় গড়ের তুলনায় কম ছিল। এখানকার স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রগুলোর মধ্যে অনেকগুলোই প্রায় দুই দশক আগে নির্মিত হয়েছিল এবং বন্যা ও অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে অবকাঠামোগত ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ক্লিনিকগুলোর পুরনো ভবন ভেঙে আইওএম নতুন দুই তলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করেছে। নবনির্মিত এই ভবনগুলো আগের চেয়ে আরও বড় ও পরিবেশগতভাবে টেকসই এবং এগুলোতে রয়েছে সৌরবিদ্যুৎ-ব্যবস্থা, নিরাপদ পানি সরবরাহ এবং উন্নত স্যানিটেশন সুবিধা।
স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক আরও বলেন, দেশের স্বাস্থ্যসেবা অবকাঠামোকে বিশ্বমানের প্রক্রিয়ায় উন্নীত করতে একসঙ্গে কাজ করছে সরকার। এ লক্ষ্যে সরকারের নানা পদক্ষেপগুলোর একটি হলো কক্সবাজারে নবনির্মিত কমিউনিটি ক্লিনিক। কক্সবাজারসহ দেশের অন্যান্য স্থানে সরকারের এই প্রচেষ্টায় আইওএম অংশ নিয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে বাংলাদেশ সরকার জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা কর্মসূচি বৃদ্ধি করে এবং কোভিড-১৯ টিকা ক্যাম্পেইন শুরু করে। সরকার এ পর্যন্ত দেশের ১২ বছরের বেশি বয়সি ৯৮ শতাংশ মানুষকে কোভিড টিকা দিয়েছে। টিকা দিতে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম এবং এশিয়ার মধ্যে প্রথম পর্যায়ে রয়েছে।
কক্সবাজারে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্যসেবা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশ সরকার এবং বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টায় ১০০টি কমিউনিটি ক্লিনিক ভবন নতুনভাবে নির্মাণ করছে আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম)। নির্মাণাধীন অবশিষ্ট ক্লিনিকগুলো ও জেলা হাসপাতালের সংস্কার কাজ ২০২৩ সালে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। প্রাক-নির্মাণ পর্যায়ে স্বাস্থ্যসেবা নির্বিঘ্নভাবে নিশ্চিত করার জন্য আইওএম অস্থায়ীভাবে অবকাঠামো নির্মাণ করেছিল।