শ্রীপুর (গাজীপুর): গাজীপুরের শ্রীপুরে রানা মিয়া (৩০) নামের এক যুবককে চোর সন্দেহে ডেকে নিয়ে রাতভর পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। পরে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে শনিবার রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহত রানা মিয়া উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের মাওনা গ্রামের মো: আমিরুল ইসলামের ছেলে। স্বজনেরা বলছেন, নিহত যুবককে পরিকল্পিতভাবে পাশবিক নির্যাতন ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, রানা মিয়া রাজমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন। শুক্রবার রাতে ওই যুবককে শিপন মিয়া ডেকে নিয়ে যান। এরপর তারা সারারাত তাকে মারধর করেন। শনিবার সকালে নিহত রানা মিয়ার বাবা আমিনুল ইসলাম উপজেলার মাওনা এলাকার বেদেপল্লির পাশে একটি নির্জন স্থানে সন্তানকে এলোপাথাড়ি মারধর করতে দেখে এগিয়ে যান। এ সময় অভিযুক্তরা নিহতের মা-বাবাকেও মারধর করেন। পরে স্থানীয়রা ওই যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়।
অভিযুক্তরা হলেন- শিপন মিয়া (২৫), আকাশ মিয়া (২২), উজ্বল মিয়া (২৫) ও ইমন (২৬)।
নিহত যুবকের ভাই কবির হোসেন বলেন, ‘শুক্রবার রাতে মাওনা পিয়ার আলী কলেজের পেছনে রানাকে ভাঙারি দোকানের মালিক শিপন ডেকে নিয়ে যান। তারপর এলাকার কিছু যুবকদের সাথে নিয়ে তার ওপর রাতভর নির্যাতন চালান শিপন। এই নির্যাতন চলে সকাল পর্যন্ত। বাবা-মা খবর পেয়ে এগিয়ে গেলে তাদের সামনেও রানাকে আঘাত করা হয়। বাধা দিতে গেলে ওরা বাবা-মাকেও মারধর করে নিহতের স্বজনদের কাছ থেকে সাদা স্টাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ছেড়ে দেয়। সেখান থেকে আমার ভাইকে উদ্ধার করে প্রথমে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল নেয়া হয়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে সেখান থেকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।’
নিহতের বাবা আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমার ছেলেকে তুলে নিয়ে দফায় দফায় নির্যাতন করে বুকের পাঁজর, দুই হাত ও পা ভেঙে দেয়। তার শরীরের এক ইঞ্চি পরিমাণ জায়গা নেই যেখানে ওরা আঘাত করনি।
অভিযুক্ত ভাঙারি ব্যবসায়ী শিপনের বক্তব্য নিতে বাড়িতে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। এ সময় শিপনের মা রোকেয়া আক্তার বলেন, ‘শিপন পালিয়ে যায়নি। সে ব্যবসায়িক কাজে বাইরে রয়েছে।’
শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেন, ‘এ ঘটনায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে কাজ করছে পুলিশ।’