৮ মাসে সর্বনিম্ন তেলের দাম, ক্রমবর্ধমান মন্দার আশঙ্কায় বিশ্ববাজার

Slider জাতীয়


চলতি সপ্তাহে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো দশকের উচ্চ মুদ্রাস্ফীতির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য সুদের হার বাড়ানোর পর ক্রমবর্ধমান মন্দার আশঙ্কায় শুক্রবার স্টক মার্কেটগুলোতে ধস নেমেছে। ডলারের বিপরীতে পাউন্ড বিপর্যস্ত হয়েছে এবং তেলের দাম কমেছে।

শুক্রবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের বেঞ্চমার্ক ব্রেন্টের দাম চার দশমিক আট শতাংশ বা ব্যারেলপ্রতি চার দশমিক ৩১ ডলার কমে ৮৬ দশমিক ১৫ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে প্রায় ছয় শতাংশ কমল ব্রেন্টের দাম।

এদিন যুক্তরাষ্ট্রের তেলের বেঞ্চমার্ক ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের (ডব্লিউটিআই) দামও চার দশমিক আট শতাংশ বা ব্যারেলপ্রতি চার দশমিক ৭৫ ডলার কমে ৭৮ দশমিক ৭৪ ডলারে দাঁড়িয়েছে। এ নিয়ে এক সপ্তাহে ডব্লিউটিআইয়ের দাম কমেছে প্রায় সাত শতাংশ।

এ নিয়ে টানা চতুর্থ সপ্তাহ উভয় বেঞ্চমার্কের দামই কমল। গত বছরের ডিসেম্বরের পর থেকে এ ধরনের ঘটনা এটিই প্রথম। এদিন ডব্লিউটিআইয়ের দাম গত ১০ জানুয়ারির থেকে সর্বনিম্ন এবং ব্রেন্টের দাম ১৪ জানুয়ারির পর থেকে সর্বনিম্ন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের গ্যাসোলিন (পেট্রল) এবং ডিজেলের ভবিষ্যৎ মূল্যও (ফিউচার প্রাইস) কমেছে পাঁচ শতাংশের বেশি।

এদিকে বাজারে মূল্যবৃদ্ধির তেজ কমার কোনো সুস্পস্ট ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। মুদ্রা নীতিনির্ধারকরা এ নিয়ে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। সতর্ক করেছেন যে, অর্থনীতিতে স্বল্প-মেয়াদী আঘাতগুলো দীর্ঘ মেয়াদী প্রভাবের চেয়ে কম বেদনাদায়ক।

মন্দার সতর্কতার পর বুধবার ফেডারেল রিজার্ভ সতর্কতার পদক্ষেপ হিসেবে ধারাবাহিক তৃতীয় বৈঠকে সুদের হার দশমিক ৭৫ শতাংশ পয়েন্টে নির্ধারণ করে এবং চলমান প্রক্রিয়ার মধ্যে এই হার আরো বাড়তে পারে, যা ২০২৪ সালে কমে আসতে পারে।

ব্রিটেন, সুইডেন, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, ফিলিপাইন ও ইন্দোনেশিয়াসহ অন্যান্য দেশে কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো অনুরূপ পদক্ষেপ নিয়েছে। সব সূচকই স্টক মার্কেটের জন্য একটি নেতিবাচক বার্তা দিচ্ছে।

ওয়াল স্ট্রিট শুক্রবার লোকসান বাড়িয়েছে। ২০২০ সালের নভেম্বরের পর থেকে ডাও (স্টক মার্কেট) সর্বনিম্ন মূল্য সূচকে নেমে এসেছে, যখন ইউরোপীয় মার্কেটে মূলধন হ্রাস পেয়েছে। এশিয়ার শেয়ার বাজারে দর পতন হয়েছে।

ট্রেডিং প্লাটফর্ম ওএএনডিএ-এর বিশ্লেষক ক্রেগ এরলাম বলেছেন, ‘এশিয়ায় সপ্তাহের একটি নেতিবাচক সমাপ্তি ও ইউরোপে আরো বেশি নেতিবাচক প্রভাব মন্দার সম্ভাবনাকে দ্রুত অনুসরণ করেছে।’

বাজেটে কর বৃদ্ধি জনসাধারণের মধ্যে আর্থিক উদ্বেগ ছড়িয়েছে। মন্দার আশঙ্কা তীব্র হচ্ছে, এতে ব্রিটিশ পাউন্ডের মান ৩৭ বছরের সর্বনিম্নে নেমে এক দশমিক ১০ ডলারে দাঁড়িয়েছে।

সিএমসি মার্কেটস ইউকে-এর প্রধান বাজার বিশ্লেষক মাইকেল হিউসন বলেছেন, ‘ইকুইটি বাজারগুলোতে এই উদ্বেগের কারণে যুক্তরাজ্যে মুদ্রাস্ফীতি আরো বেশি চড়া হওয়ার দিকে ঠেলে দিতে পারে এবং এটিকে কমিয়ে আনা আরো কঠিন করে তুলতে পারে।’

ইউরোজোনে, মন্দার আশঙ্কা আরো গভীর হয়েছে। তথ্য বলছে, সেপ্টেম্বরে এর অর্থনৈতিক কার্যক্রম আবার কমেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *