ময়মনসিংহের ফুলপুরে উদ্ধার হওয়া লাশটি খুলনা থেকে নিখোঁজ রহিমা বেগমের (৫২) বলে মনে করছেন তার মেয়ে মরিয়ম মান্নান। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুক স্ট্যাটাসে তিনি এ দাবি করেন। ‘মায়ের লাশ’ শনাক্ত করতে শুক্রবার সকালে ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার উদ্দেশে পথে রওনা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে খুলনার দৌলতপুরের মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানে টিউবওয়েলের পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম।
বওলা এলাকায় একটি কবরস্থানের ঝোপজঙ্গল থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। গতকাল রাতে উদ্ধার হওয়া ওই লাশের পোশাক ও আলামত সম্পর্কে থানায় জানতে চান মরিয়ম। পোশাক ও উদ্ধার হওয়া আলামতের কথা শুনে নিজের মায়ের লাশ বলে দাবি করেন মরিয়ম।
এরপর গতকাল দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে মরিয়ম তার ফেসবুক পোস্টে লেখেন, ‘আমার মায়ের লাশ পেয়েছি এই মাত্র।’ রাত ১২টার পর ফেসবুকে আরেক পোস্টে মরিয়ম মান্নান লেখেন, ‘আর কারো কাছে আমি যাব না! কাউকে আর বলব না, আমার মা কোথায়! কাউকে বলব না, আমাকে একটু সহযোগিতা করুন! কাউকে বলব না, আমার মাকে একটু খুঁজে দেবেন! কাউকে আর বিরক্ত করব না! আমি আমার মাকে পেয়ে গেছি!’
শুক্রবার সকালে আবারো ফেসবুক পোস্টে বলেন, ‘আমার হতভাগিনী মায়ের পচাগলা লাশ আনতে ময়মনসিংহের ফুলপুরে যাচ্ছি। আমার মায়ের হাত, আমার মায়ের চুল, মায়ের কপাল, আমি চিনব না?’
ময়মনসিংহের ফুলপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ১০ সেপ্টেম্বর সকালে থানার বওলা এলাকায় একটি কবরস্থানের ঝোপজঙ্গল থেকে অজ্ঞাতনামা নারীর বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করেছেন তারা। নারীর বয়স ৩০-এর বেশি হতে পারে। দুই দিন পর ১২ সেপ্টেম্বর লাশটি দাফন করেছেন। তবে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আলামতও সংরক্ষণ করা হয়েছে।
ওসি আবদুল্লাহ আল মামুন আরো জানান, মরিয়ম বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে ফোন করে বলেছেন তিনি সকালে থানায় এসে জব্দ করা নারীর পোশাকসহ অন্যান্য আলামত দেখবেন। যদি তার পোশাক দেখে মেয়েটি বলেন এগুলো তার মায়ের, তাহলে চূড়ান্তভাবে লাশ শনাক্তে মেয়ের ডিএনএ পরীক্ষা করানো হতে পারে।
গত ২৭ আগস্ট রাত ১০টার দিকে মহেশ্বরপাশা উত্তর বণিকপাড়া এলাকার বাসার উঠানের টিউবওয়েলে পানি আনতে যান রহিমা বেগম। এক ঘণ্ট পরেও তিনি বাসায় না ফেরায় তার সন্তানেরা খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। টিউবওয়েলের পাশে তাদের মায়ের জুতা, ওড়না ও পানির পাত্র পড়ে থাকলেও মাকে তারা খুঁজে পায়নি। এ ঘটনায় ওই রাতেই রহিমা বেগমের ছেলে দৌলতপুর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরদিন তার মেয়ে আদুরী আক্তার অজ্ঞাতনামা পরিচয়ের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে থানায় অপহরণ মামলা করেন। এ ছাড়া বিষয়টি র্যাবকেও জানানো হয়। এ মামলায় ছয়জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।