গুরুতর অসুস্থ হয়ে আবারও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ভর্তি হয়েছেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাট।
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিএসএমএমইউয়ের গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি বিভাগের মেডিকেল অফিসার ডা. কুতুবউদ্দিন।
তিনি বলেন, আজ সন্ধ্যার দিকে তিনি নিজ বাসায় বাথরুমে পড়ে যান। এরপর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বর্তমানে তাকে হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) রাখা হয়েছে।
কুতুবউদ্দিন বলেন, তার দীর্ঘদিন থেকেই হাইপারটেনশন আছে, ডায়াবেটিসের সমস্যা আছে। আমাদের মনে হয় এসব কারণেই হঠাৎ বাথরুমে পড়ে গিয়েছিলেন। তার হার্টের কোনো সমস্যা হয়েছে কি না এটা জানার জন্যই তাকে ভর্তি করা হয়েছে। ইসিজি, ইকোসহ তাকে বেশ কয়েকটি পরীক্ষা দেওয়া হয়েছে, কাল রিপোর্ট আসলে বিস্তারিত বলা যাবে।
পড়ে যাওয়ায় সম্রাট আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন কি না— জানতে চাইলে তিনি বলেন, পড়ে যাওয়ায় কোনো ফ্রাকচার হয়নি। আসার পরপরই এক্সরে করা হয়েছে, কোথাও কোনো জটিল আঘাত বা হাঁড় ভেঙে যাওয়ার মতো কিছু হয়নি।
গত ২২ আগস্ট জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের দায়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে ১০ হাজার টাকা মুচলেকায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। অসুস্থ বিবেচনায় আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করা হয়। সোমবার (১৯ সেপ্টেম্বর) তার জামিনের মেয়াদ ২০ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়িয়েছেন আদালত।
জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর বিএসএমএমইউ চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন সম্রাটের চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। বিএসএমএমইউয়ের কার্ডিওলজিস্ট বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও ইউনিট প্রধান ডা. মো. রসুল আমিন (শিপন) তখন বলেন, তার হার্টের রোগ। এটা নিয়ে আসলে কোনো ভবিষ্যদ্বাণী করা যায় না। সম্রাটের হার্ট-রেটটা মাঝেমধ্যেই বেড়ে যায়। এমনও হয়েছে রাত তিনটায় বেড়েছে। এ অবস্থায় সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসা না নিলে যেকোনো ধরনের অঘটন ঘটে যেতে পারে। এখন সামনের দিনে এই হার্ট রেট বাড়তেও পারে আবার নাও বাড়তে পারে।
ক্যাসিনোবিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এরপর তাকে যুবলীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়।
গ্রেপ্তার হওয়ার পর জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ওই বছরের ১২ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক। তাতে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়। ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় দুদক।
চলতি বছরের ১০ এপ্রিল থেকে ১১ মের মধ্যে চার মামলায় জামিন পান সম্রাট। কারাগারে যাওয়ার ৩১ মাস পর মুক্তি মেলে তার। তবে এক সপ্তাহ পর ১৮ মে হাইকোর্ট জামিন বাতিল করে তাকে আবার বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণের আদেশ দিলে আবার তার বন্দিজীবন শুরু হয়।