ব্রিটেনের স্থানীয় সময় সকাল ১০টা ৪৪ মিনিটে রানির কফিন ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে নিয়ে যাওয়া হবে। বিকেল ৩টা ৬ মিনিটে উইন্ডন্সরে পৌঁছাবে কফিন এবং সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় স্বামী ফিলিপের পাশে রানিকে সমাহিত করা হবে। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে রাষ্ট্রীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দেবেন বিশ্বনেতারা। ডেইলি মেইল
আজ সকালে রানির কফিন ওয়েস্টমিনস্টার প্রাসাদ থেকে গথিক চার্চে নিয়ে যাওয়া হবে। প্রথানুযায়ী, কফিনবাহী গাড়ি দড়ি দিয়ে টেনে নিয়ে যাবেন ব্রিটিশ সেনারা। ঘণ্টাব্যাপী আনুষ্ঠানিকতা শেষে কফিনটি একটি সামরিক শোকযাত্রায় নিয়ে যাওয়া হবে ওয়েলিংটন আর্চে। দুপুর ১ টায় উইন্ডসরের লং ওয়াকে নিয়ে যাওয়া হবে রানির কফিন। সন্ধ্যায় সেন্ট জর্জ চ্যাপেলের রয়্যাল ভল্টে রানিকে দাফন করা হবে। সেখানে চিরনিদ্রায় শায়িত তার প্রিয় স্বামী ডিউক অব এডিনবার্গ এবং পিতামাতা রাজা ষষ্ঠ জর্জ ও রানিমাতা।
ওয়েস্টমিনস্টার হল থেকে ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবে পর্যন্ত রানির কফিন দেখার জন্যে লন্ডনের রাস্তায় অন্তত ১০ লাখ মানুষ সারিবদ্ধ হয়ে অবস্থান নিয়েছেন। তারা রানিকে নিয়ে তাদের দুঃখ ও গৌরবের ঐতিহাসিক মুহূর্তগুলির স্মৃতিচারণ করেছেন। তাদেরকে আর ভিড় না করে ঘরে ফিরে যেতে বলা হয়েছে।
রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে বিশে^র প্রায় প্রতিটি দেশের রাজা, রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রী যোগ দেবেন রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়। থাকবেন সশস্ত্র বাহিনীর প্রবীণ সৈনিক, এনএইচএস কর্মী এবং দাতব্য কর্মীসহ ২ হাজার জন। ওয়েস্টমিনস্টার অ্যাবেতে ২০০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই প্রথম রয়্যাল স্টেট ফিউনারেল হচ্ছে।
রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ সিংহাসনে বসার পর থেকে তার মৃত্যু পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ১৪ জন প্রেসিডেন্ট এসেছেন। এর মধ্যে ১৩ জনই রানির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এরই মধ্যে লন্ডনে পৌঁছেছেন। রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় আরো যোগ দিচ্ছেন জাপান, স্পেন, বেলজিয়াম, ডেনমার্কসহ বিভিন্ন দেশের রাজারানি এবং বিভিন্ন দেশের সরকারপ্রধান। তাদের মধ্যে রয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জইর বলসোনারো, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রো, দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসা, ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু, চীনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ওয়াং কিশান প্রমুখ।
অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় ছয়টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। এই ছয়টি দেশ হচ্ছে রাশিয়া, মিয়ানমার, বেলারুশ, সিরিয়া, ভেনেজুয়েলা ও আফগানিস্তান।
সিরিয়া ও ভেনেজুয়েলার সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই ব্রিটেনের। আর বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আফগানিস্তানকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নৃশংসতা চালানো এবং নির্বাচিত সু চি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করায় মিয়ানমারের জান্তা সরকারের কর্মকর্তাদের ওপর ব্রিটেনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আর ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে রাশিয়ার ওপর ব্রিটেনসহ পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বেলারুশের ওপরও। ফলে এই দেশগুলোর প্রতিনিধি থাকছেন না রানির অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায়।
ব্রিটেনের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, ব্রিটেন শোককে ভূরাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করতে চাইছে। এটি অত্যন্ত অনৈতিক। সম্পাদনা: সালেহ্ বিপ্লব