রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন মিয়ানমার জান্তা সরকারের প্রধান মিন অং হ্লাইং। এ সাক্ষাতে রুশ নেতার ব্যাপক প্রশংসা করেছেন তিনি। রীতিমতো পুতিনের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। পুতিনকে হ্লাইং বলেছেন, ‘আপনি শুধু রাশিয়ার নেতা নন, আপনি পুরো বিশ্বের নেতা। কারণ বিশ্বজুড়ে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছেন আপনি।’
রাশিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় শহর ভ্লাদিভস্তকে চলছে ইস্টার্ন ইকনোমিক ফোরামের (ইইএফ) বার্ষিক সম্মেলন। চীন, ভারত, জাপান, মিয়ানমারসহ বেশ কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিরা ওই সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। সম্মেলনে যোগ দিতে গত রোববার (৪ সেপেটম্বর) রাশিয়া পৌঁছান মিয়ানমার সেনাপ্রধান হ্লাইং। মূল সম্মেলন চলাকালে মঙ্গলবার (৬ সেপ্টেম্বর) রুশ প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেন তিনি।
গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের ক্ষমতা গ্রহণের পর পুতিনের সঙ্গে এটা হ্লাইংয়ের প্রথম সাক্ষাৎ। আর প্রথম বৈঠকেই রুশ নেতাকে প্রশংসায় ভাসান তিনি। পুতিন ও হ্লাইংয়ের বৈঠক বিষয়ে একটি বিবৃতি দিয়েছে রুশ প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ক্রেমলিন।
বিবৃতি অনুযায়ী হ্লাইং পুতিনকে বলেছেন, ‘আপনার কারণেই রাশিয়ার ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। বলতে গেলে আপনার শাসনামলেই রাশিয়া বিশ্বের নেতৃত্বের স্থানে উঠে এসেছে। শুধু রাশিয়া নয়, আমরা আপনাকে পুরো বিশ্বের নেতা মনে করি। কারণ আপনি সমগ্র বিশ্বের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করেছেন।’
জবাবে পুতিন বলেন, ‘মিয়ানমার দক্ষিণ–পূর্ব এশিয়ায় আমাদের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত অংশীদার। প্রতিনিয়ত আমাদের সম্পর্কের ইতিবাচক উন্নতি হচ্ছে।’ মিয়ানমারের জান্তা কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছে, দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা নিয়ে দুই রাষ্ট্রনেতা বন্ধুত্বপূর্ণ ও খোলামেলা আলোচনা করেছেন। এ ছাড়া দুই দেশের বর্তমান সম্পর্ক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন তারা।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করেন হ্লাইং। এর এক বছর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে। এই দুই ঘটনার পর থেকে মিয়ানমার ও রাশিয়া কূটনৈতিকভাবে অনেকটাই একঘরে হয়ে পড়েছে।
রাশিয়া যেমন মধ্যপ্রাচ্য, এশিয়া ও আফ্রিকার দেশগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করতে চাইছে। অপরদিকে পশ্চিমা দেশগুলোর নিষেধাজ্ঞার মুখে নতুন মিত্র খোঁজার চেষ্টা চালাচ্ছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারে গণআন্দোলন চলছে। গণতন্ত্রপন্থী প্রতিরোধ যোদ্ধাদের মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে জান্তা বাহিনী। ফলে দেশটির অর্থনীতিও পঙ্গু হওয়ার পথে।