গ্রাম বাংলা ডেস্ক: শনিবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে মেসি নির্ভর আর্জেন্টিনা মুখোমুখি হচ্ছে তারকা সমৃদ্ধ বেলজিয়ামের। যে ম্যাচে আরেকবার আর্জেন্টাইনদের অনুপ্রেরণা হিসেবে থাকছেন লিওনেল মেসি। শনিবার বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় ব্রাসিলিয়ায় অনুষ্ঠিতব্য ম্যাচটি সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি), গাজি টিভি ও মাছরাঙ্গা টেলিভিশন।
এদিন একটি জয় আর্জেন্টিনাকে পৌঁছে দেবে ব্রাজিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। যেখানে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হবে হল্যান্ড কিংবা কোস্টারিকার সঙ্গে। ১৯৮৬ সালে সেমিফাইনালে এই বেলজিয়ামকে হারিয়েই ফাইনালে পৌছেছিল আর্জেন্টিনা। যে আসর থেকে দ্বিতীয়বারের মত বিশ্বকাপ শিরোপা লাভ করে ম্যারাডোনার দলটি।
এর বাইরেও চারবারের লড়াইয়ে প্রতিবারই আর্জেন্টাইনদের কাছে হার মেনেছে বেলজিয়াম। তবে এবারের আসরে আর্জেন্টিনার পারফর্মেন্স খুব একটা মন ভরাতে পারছে না সমর্থকদের। পুরো দলটিই কেবল মেসির আশির্বাদ নিয়ে এই পর্যন্ত এসেছে বলে মন্তব্য তাদের।
গ্র“প পর্বে দলের পে চার গোল করে এই বার্সেলোনা তারকাই আর্জেন্টিনাকে গ্র“প সেরা করে তুলে আনে শেষ ষোলতে। সেখানেও অতিরিক্ত সময়ে গিয়ে এই সুপারস্টারের বানিয়ে দেয়া বলে ডি মারিয়া গোল করে এগিয়ে দেয় আর্জেন্টিনাকে। ফলে ১-০ গোলের ব্যবধানে কোয়ার্টার ফাইনাল নিশ্চিত করে ল্যাতিন পরাশক্তিরা। অর্থাৎ এখানেও আর্জেন্টিনার জয় পরাজয়ের নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছেন ওই মেসিই। মেসিই অন্য দলগুলোর সঙ্গে আর্জেন্টিনার পার্থক্য গড়ে দিচ্ছেন।
দেশটির কিংবদন্তী ফুটবলার দিয়াগো ম্যারাডোনাও এই বিষয়টি নিয়ে বেশ শংকিত। শুধুমাত্র মেসি নির্ভরতা দলের জন্য সুফল বয়ে আনতে পারবে না বলে কোচ অ্যালেজান্দ্রো সাবেলাকে হুশিয়ার করে দিয়েছেন তিনি। বলেছেন এই প্লে মেকারের ঘাড় থেকে চাপ কমাতে।
বিশ্বকাপের শুরু থেকে আর্জেন্টিনার ‘দুর্দান্ত চার’ (ফ্যান্টাস্টিক ফোর) নিয়ে যে হৈচৈ শুনা গিয়েছিল টুর্নামেন্টে সেটির প্রভাব খুব একটা চোখে পড়েনি। লিওনেল মেসি, এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, গঞ্জালো হিগুয়েন ও সার্জিও এগুয়েরোর সমন্বয়ে যে ‘দুর্দান্ত চার’ নিয়ে কথা ওঠেছিল সেটি ময়দানি লড়াইয়ে প্রভাব ফেলতে না পারলেও মেসি এখনো পর্যন্ত ঠিকই তার দায়িত্ব পালন করে চলেছেন নির্ভতার সঙ্গে।
পেশীর ইনজুরির কারণে বেলজিয়ামের বিপে ম্যাচে সার্জিও এগুয়েরোর অংশগ্রহণ জোড়ালো অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। গঞ্জালো হিগুয়েন এখনো পর্যন্ত গোলের দেখা পাননি। সুইসদের বিপক্ষে জয়সুচক গোলটি করলেও এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া এখনো পর্যন্ত একক দতার ফসল ঘরে তুলতে পারেননি।
১০ নাম্বার জার্সিধারীর ওপর নির্ভরতার জন্য সমালোচনার মধ্যে থাকা কোচ সাবেলা অবশ্য বলেছেন যে, তার দলটি মেসির ওপর বেশি নির্ভরশীল হয়ে গেছে। বেলজিয়ামের বিপে ম্যাচে দলের চেহারা ভিন্ন হবে বলেও আশ্বস্ত করেছেন তিনি।
এদিকে শুধুমাত্র একজন মেধাবী খেলোয়াড়ের ওপর আর্জেন্টিনা নির্ভরশীল হলেও প্রতিপ বেলজিয়ামের রয়েছে একগুচ্ছ মেধাবী খেলোয়াড়ের সমারোহ। ১৯৮৬ সালে তৎকালীন দলটি যেমন এনজো সিফোর বুদ্ধিদৃপ্ত পারফর্মেন্সে অনুপ্রানীত ছিল এবারও তাদের অনুপ্রেরনার জায়গায় রয়েছেন ২৩ বছর বয়সি এডেন হ্যাজার্ড। যিনি ব্রাজিল বিশ্বকাপে এখনো আসল চেহারা পরিপুর্ণভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেননি।
গ্র“প পর্বে আলজেরিয়া ও রাশিয়ার বিপে সময়োচিত সহায়তা দিয়ে দলকে এগিয়ে নিলেও এখনো গোলের দেখা পাননি চেলসির এই উইঙ্গার। কোচ মার্স উইলমটস এই বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী যে তার দলটি এককভাবে কারো ওপর নির্ভরশীল নয়।
তিনি বলেন,‘ প্রতিপ দল যখন এডেনকে খুব বিপজ্জনক মনে করছেন তখনই তার সমান ভুমিকা পালন করছেন দলের অপর দুই সদস্য (দ্রিস) মার্টেনস ও (কেভিন) ডি ব্রাইন। তারকা খ্যাতি থাকার কারণে আন্তর্জাতিক মিডিয়া হয়তো এডেনকেই বেশী গুরুত্ব দিচ্ছেন। তবে আমি দেখতে পাচ্ছি যে বেলজিয়াম কোন একজন খেলোয়াড়ের ওপর বেশী করে নির্ভরশীল হয়ে পড়েনি।
এদিকে কুচকিতে সমস্যা সত্ত্বেও অধিনায়ক ভিনসেন্ট কোম্পানির সময়মত ফিট হয়ে ওঠার সংবাদে কিছুটা স্তম্ভিত আর্জেন্টাইন শিবির। অপরদিকে সময়মত হয়তো সুস্থ হয়ে ফিরতে পারছেন না এগুয়েরো। তার জায়গায় একাদশভুক্ত হতে পারেন এজেকুইয়েল ল্যাভেজ্জি । মার্কোস রোহোর নিষেধাজ্ঞার কারণে লেফট ব্যাকের দায়িত্বটুকু স্বাভাবিক ভাবে বর্তাবে হোসে মারিয়া বসন্তের ঘারে। সাবেলা বলেন, ‘রোহো খুবই ভালো খেলোয়াড়। তবে বসন্তের ওপরও আমাদের দারুণ আস্থা রয়েছে।