ভারতের দেয়া ১৭৪ রান তাড়া করতে নেমে দারুন শুরু শ্রীলঙ্কার। তাদের উদ্বোধনী জুটি ভাঙ্গে ৯৭ রানে। এরপর ম্যাচে ফেরার তাড়ায় দ্রুত ৪ উইকেট তুলে নেয় ভারত। তাতে খুব একটা প্রভাব পড়েনি। অধিনায়ক দাসুন শানাকা ও রাজাপাকসের নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে আর কোনো উইকেট না হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় লঙ্কানবাহিনী।
মঙ্গলবার বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয় ম্যাচটি।
শ্রীলঙ্কা গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শোচনীয় হার। এরপর বাংলাদেশের বিপক্ষে এবং সুপার ফোরে আফগানিস্তানের বিপক্ষে জয় দিয়ে ছন্দে ফিরে লঙ্কানবাহিনী। সবশেষ আজ ভারতকে ৬ উইকেটে হারিয়ে ফাইনালের টিকেট নিশ্চিতে আরো এক দাফ এগিয়ে যায় লঙ্কানরা।
গ্রুপ পর্বে পাকিস্তানকে হারালেও সুপার ফোরে পাকিস্তানের কাছেই হার দিয়ে শুরু গতবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের। আজ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচটা তাই কঠিন সমীকরণের। লঙ্কানদের কাছে হারলেই এশিয়া কাপে ফাইনালের দৌড় থেকে ছিটকে পড়তে হবে ভারতকে। এমন সমীকরণে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে ভারত ৮ উইকেট হারিয়ে সংগ্রহ করে ১৭৩ রান।
ভারতের দেয়া টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে টি-টোয়ান্টির নির্ধারিত ৬ ওভার পাওয়ার প্লেতে শ্রীলঙ্কা সংগ্রহ করে ৫৭ রান। কোনো উইকেট না হারিয়ে শুভ সূচনা দলটির। সেভাবেই চলে ১১ ওভার পর্যন্ত। ১২তম ওভারে দলীয় ৯৭ রানে প্রথম উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা।
১৪০ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট চালিয়ে ব্যক্তিগত ৫২ ফেরেন নিশানাকা। এরপর একই ওভারের চতুর্থ বলে আসালাঙ্কা এলবিডব্লিউ করে ফেরান যুজবেন্দ্র চাহাল।
এরপর দ্রুত উইকেট নিয়ে ম্যাচে ফেরার চেষ্টায় ভারত। কুশল মেন্ডিস ও গুনাতিলাকা ফেরেন দলীয় ১১০ রানের কোটায়।
এরপর অবশ্য আর কোনো উইকেট হারাতে হয়নি দলটির। অধিনায়ক দাসুন শানাকা ও রাজাপাকসের নিয়ন্ত্রিত ব্যাটিংয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছায় লঙ্কানবাহিনী। ১৮৩ স্ট্রাইক রেটে ব্যাট চালিয়ে ১৮ বলে ৩৩ রান করেন অধিনায়ক দাসুন শানাকা। অন্যদিকে আরেক ফিনিশার রাজাপাকসের সংগ্রহ ১৭ বলে ২৫ রান।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নামলে শুরুতেই ভারত শিবিরে লঙ্কানদের আঘাত। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারের পঞ্চম বলে ওপেনার কেএল রাহুলকে হারায় ভারত। ব্যক্তিগত ৬ রান করে থিকসানার বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরেন তিনি।
এদিন রানের খাতা খুলতেই পারেননি বিরাট কোহলি। এশিয়া কাপের সফল ধারাবাহিকাতা ধরে রাখতে পারেননি তিনি। দলীয় ১৩ রানে ফেরেন ভারতীয় সাবেক অধিনায়ক। ২ ওভার ৪ বলে মাদুশঙ্কার করা বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি।
৩ ওভারে ২ উইকেট হারানো ভারতকে খাদের কিনারা থেকে তুলে নেন অধিনায়ক রোহিত শর্মা। সূর্য কুমারকে সাথে নিয়ে ৪১ বলে ৭২ রানের এক দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন রোহিত। ১৩তম ওভারে করুনারত্নের বলে নিশানাকার তালু বন্দি হন তিনি। দলীয় ১১০ রানে রোহিত ফিরলে সূর্য কুমার ফেরেন ৯ রান যোগ করতেই।
দলীয় ১১৯ রানে ৪ উইকেট হারানো দলটি থামে ১৭৩ রানে।
হার্দিক পান্ডিয়া ও উইকেটরক্ষক ব্যাটার রিশব পন্থ করেন ১৭ রান করে। তারা ফেরেন যথাক্রমে দাসুন শানাকা ও মাদুশঙ্কার বলে।
শ্রীলঙ্কার হয়ে মাদুশঙ্কার তুলে নেন ৩ উইকেট। করুনারত্নে ও দাসুন শানাকার শিকার ২টি করে উইকেট। থিকসানা নেন ১ উইকেট।
ভারতের হয়ে যুজবেন্দ্র চাহাল নেন ৩ উইকেট। একাদশে ফেরে ১ উইকেট তুলে নেন রবিচন্দ্রন অশ্বিন।
শ্রীলঙ্কা একাদশ : কুশল মেন্ডিস, রাজাপাকশে, দাসুন শানাকা (অধিনায়ক), হাসারাঙ্গা, নিশানাকা, করুনারত্নে, গুনাতিলাকা, আসালাঙ্কা, থিকসানা, মাদুশঙ্কা, আসিথা ফার্নান্দো।
ভারত একাদশ : রোহিত শর্মা (অধিনায়ক), লোকেশ রাহুল, বিরাট কোহলি, সূর্য কুমার যাদব, রিশব পন্থ (উইকেটরক্ষক), দীপক হুদা, হার্দিক পান্ডিয়া, ভুবনেশ্বর কুমার, রবিচন্দ্রন অশ্বিন, আশদ্বীপ সিং ও যুজবেন্দ্র চাহাল।