বাঙালি সিনেমাপ্রেমীদের জন্য এক আবেগের নাম সালমান শাহ। ক্ষণজন্মা এই নায়ক খুব কম সময় পর্দায় থাকলেও কাজ দিয়ে এখনো চির অম্লান। ঢাকাই সিনেমায় সালমান শাহ এসেছিলেন ধূমকেতুর মতো। এলেন, দেখলেন, জয় করলেন রীতিতে তিনি হয়েছিলেন গণমানুষের সুপারস্টার। কিন্তু ক্যারিয়ারের মাত্র চার বছরেই নিভে গিয়েছিল এ উজ্জ্বল নক্ষত্র।
রহস্যময় মৃত্যুতে ১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর না ফেরার দেশে চলে যান সালমান শাহ। চলে যাওয়ার ২৬ বছর পর আজও বাংলা চলচ্চিত্রের আকাশে ক্ষণজন্মা এক নক্ষত্রকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছেন তার ভক্ত ও সহকর্মীরা। কারণ আজও ভক্তদের ‘অন্তরে অন্তরে’ সালমান শাহ।
আজও সালমান শাহ বাংলা সিনেমার দর্শকের কাছে আবেগের নাম, রুপালি পর্দার ভালোবাসার রাজ্যে স্বপ্নের রাজকুমারের নাম। এখনো দর্শকের কাছে সালমান শাহর রোমান্স, সহজ ও সাবলীল অভিনয় অত্যন্ত প্রিয়।
সালমান শাহর প্রকৃত নাম চৌধুরী মোহাম্মদ শাহরিয়ার ইমন। টেলিভিশন নাটক দিয়ে তার অভিনয়জীবন শুরু হলেও নব্বইয়ের দশকে তিনি চলচ্চিত্রে অন্যতম জনপ্রিয় শিল্পী হয়ে ওঠেন। ১৯৯৩ সালে তার অভিনীত প্রথম চলচ্চিত্র সোহানুর রহমান সোহান পরিচালিত ‘কেয়ামত থেকে কেয়ামত’ মুক্তি পায়। একই সিনেমায় নায়িকা মৌসুমী ও গায়ক আগুনেরও অভিষেক হয়েছিল।
ক্যারিয়ারের মোট ২৭টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন সালমান শাহ। শাবনূরের সঙ্গে জুটি হয়ে ১৩টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন সালমান। এ জুটির সব কটি সিনেমাই ছিল ব্যবসাসফল। সালমান-শাবনূর জুটির জনপ্রিয়তা এখনো তুঙ্গে। শাবনূর ছাড়াও মৌসুমী, শাহনাজ, অন্তরা, শিল্পীসহ অনেকের সঙ্গে অভিনয় করেছেন সালমান শাহ।
সালমান শাহ তার অভিনয় ও সুদর্শন চেহারার জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় ছিলেন। বিভিন্ন চলচ্চিত্রে সালমান শাহ কপালে রুমাল বাঁধতেন, পরবর্তী সময়ে তৎকালীন তরুণ সমাজের মধ্যেও এমন একটি ট্রেন্ড শুরু হয়ে গিয়েছিল। ১৯৯৬ সালে রহস্যজনক মৃত্যু হয় কালজয়ী এই নায়কের।
দীর্ঘ ২৬ বছর পার হলেও তুমুল জনপ্রিয় এই নায়কের মৃত্যুর রহস্য আজও উদঘাটন হয়নি। তিনি আত্মহত্যা করেছেন- এই মর্মে কয়েকবার তদন্ত সংস্থা তাদের প্রতিবেদনও দাখিল করেছে আদালতে। যদিও তার পরিবার এখনো সালমানের মৃত্যুকে আত্মহত্যা মানতে নারাজ। তার মায়ের মতে, সালমান শাহকে খুন করা হয়েছে।