গণবিক্ষোভের মুখে পালিয়ে যাওয়ার প্রায় দুই মাস পর শ্রীলঙ্কায় ফিরেছেন দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপাকসে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, শনিবার (৩ সেপ্টেম্বর) ভোরে থাইল্যান্ড থেকে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে রাজধানী কলম্বোতে অবতরণ করেন ৭৩ বছর বয়সী শ্রীলঙ্কার সাবেক এই প্রেসিডেন্ট।
অস্থায়ী ভিসায় থাইল্যান্ডে অবস্থান করা রাজাপাকসে সিঙ্গাপুর হয়ে দেশে ফিরেছেন বলে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যগুলো। এদিকে এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, শ্রীলঙ্কার কয়েকজন মন্ত্রী বিমানবন্দরে গোতাবায়ার সঙ্গে দেখা করেছেন।
শ্রীলঙ্কায় চরম অর্থনৈতিক সংকট ঘিরে শুরু হওয়া বিক্ষোভের জেরে গত ১৩ জুলাই সামরিক বাহিনীর সহযোগিতায় দেশ ছেড়ে পালান গোতাবায়া রাজাপাকসে। প্রথম মালদ্বীপ এবং এরপর সেখান থেকে সিঙ্গাপুরে যান। সিঙ্গাপুরে গিয়ে পদত্যাগপত্র পাঠান গোতাবায়া।
প্রাথমিকভাবে গোতাবায়াকে ১৪ দিনের স্বল্পমেয়াদি ভিজিট পাস দেয় সিঙ্গাপুরের অভিবাসন কর্তৃপক্ষ। পরে তার ভিজিট পাসের মেয়াদ আরও ১৪ দিন বাড়ানো হয়। ১১ আগস্ট সেই পাসের মেয়াদ শেষ হলে থাইল্যান্ডের উদ্দেশে সিঙ্গাপুর ছাড়েন গোতাবায়া। এরপর থেকে থাইল্যান্ডেই ছিলেন তিনি।
গোতাবায়ার পদত্যাগের পর শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট হন দেশটির প্রবীণ রাজনীতিবিদ রনিল বিক্রমাসিংহে। বিবিসি বলছে, রাজাপাকসের প্রত্যাবর্তন নতুন সরকারের জন্য একটি সংবেদনশীল বিষয়। কারণ বিক্রমাসিংহের সরকার নতুন করে আর কোনো বিক্ষোভ চায় না। পাশাপাশি গোতাবায়ার নিরাপত্তাও নিশ্চিত করতে হবে সরকারকে।
যদিও জিবন্তা পেরিস নামে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নেয়া এক নেতা বিবিসিকে বলেছেন, আমরা রাজাপাকসের প্রত্যাবর্তনের বিরোধিতা করছি না। যে কোনো শ্রীলঙ্কার নাগরিক দেশে ফিরতে পারেন। দুর্নীতির কারণে তার (গোতাবায়া রাজাপাকসে) সরকারের বিরুদ্ধে মানুষ রাস্তায় নেমেছিল। কিন্তু তার সঙ্গে আমাদের কোনো ব্যক্তিগত শত্রুতা নেই।
তবে রাজনীতি বা সরকারে রাজাপাকসের পুনরায় যোগদানের যে কোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করার কথা জানিয়েছেন অনেক বিক্ষোভকারী।
এদিকে দেশে ফেরার পর গোতাবায়া তার ব্যক্তিগত বাসভবনে ফিরেছেন নাকি তাকে অন্য কোথাও নিয়ে যাওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি।