‘তোমারে পুইত্তা ফালামু’ ইবি ছাত্রীকে শিক্ষিকার হুমকি

Slider শিক্ষা


‘আমি রোকেয়া হল ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক ছিলাম। চিনো তুমি আমারে? আমি কত পাওয়ার চালাইছিলাম তুমি জানো? তোমার এলাকার মেয়র টিটু ভাইকে চিনো? বইল্লা (বলে) ওইখানে তোমারে পুইত্তা ফালামু।’

ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সম্পাদক পরিচয় দিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক ছাত্রীকে হুমকি দিয়েছেন এক শিক্ষিকা। অভিযুক্ত ওই শিক্ষিকার নাম মাহবুবা সিদ্দিকা। তিনি ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও খালেদা জিয়া হলের আবাসিক শিক্ষক।

গত বুধবার তার হলের এক ছাত্রীকে এমন হুমকি দিয়ে আলোচনায় এসেছেন মাহবুবা সিদ্দিকা। এ নিয়ে সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে চলছে সমালোচনা। শিক্ষিকার এমন আচরণে ক্ষুব্ধ ও লজ্জিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।

এদিকে এ ঘটনায় শনিবার নিরাপত্তা শঙ্কার কথা জানিয়ে ছাত্র উপদেষ্টা ও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী। একই সঙ্গে ঘটনা অনুসন্ধানে তিন সদস্যের একটি কমিটি করা হয়েছে।

অপরদিকে ওই ছাত্রীকে হুমকি দিতে ময়মনসিংহের মেয়রের নাম ব্যবহার করা হয়েছে। তবে ওই মেয়র এ বিষয়ে কিছুই জানেন না এবং ওই শিক্ষিকাকে চেনেন না বলে জানিয়েছেন।

ময়মনসিংহ সিটি মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, ‘আমি ওই শিক্ষিকাকে চিনি না। সে এমনটা বলে অপরাধ করেছে।’

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, ২৩ আগস্ট ভুক্তভোগী ওই ছাত্রী বোরকা পরে হলের সিট বরাদ্দের জন্য নেওয়া সাক্ষাৎকারে উপস্থিত হন। এ সময় ওই বোর্ডে তাকে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়। কোনোরকম সংশ্লিষ্টতা না থাকা সত্ত্বেও তাকে শিবির আখ্যায়িত করা হয়। এ ঘটনা তার এক পরিচিত ছাত্রলীগের বড়ভাইকে জানালে তাকে প্রভোস্ট কক্ষে ডেকে নানাভাবে হুমকি দেওয়া হয়। এ ঘটনায় তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত।

লিখিত অভিযোগের বিষয়ে ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর ড. শেলীনা নাসরিন বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে আগামীকাল বসব। বিভিন্ন পত্রিকায় যে ভাষার কথা উল্লেখ হয়েছে সেটি সত্য হলে এভাবে বলা সমীচীন হয়নি।

এদিকে ঘটনা অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট হল কর্তৃপক্ষ আবাসিক শিক্ষক নাজমুল হুদাকে আহবায়ক ও ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাহিদা আক্তার এবং ল অ্যান্ড ল্যান্ড ম্যানেজমেন্ট বিভাগের প্রভাষক মেহেদী হাসানকে সদস্য করে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। কমিটিকে দ্রুত ঘটনার প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।

প্রভোস্ট কাউন্সিলের সভাপতি ও খালেদা জিয়া হল প্রভোস্ট প্রফেসর ড. ইয়াসমিন আরা সাথী বলেন, হল প্রশাসন থেকে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টির বিষয়ে অনুসন্ধান করতে কমিটি করা হয়েছে। প্রশাসনকেও বিষয়টি জানিয়েছি। তারা এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।

লিখিত অভিযোগের বিষয়ে সহকারী অধ্যাপক মাহবুবা সিদ্দিকা বলেন, ছাত্র উপদেষ্টা, প্রক্টর ডাকলে আমি কথা বলব। ছাত্রীকে হুমকির বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

প্রো-ভিসি প্রফেসর ড. মাহবুবুর রহমান বলেন, অফিসিয়ালি এখনো অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ হাতে পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *