প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে চা-বাগানের মালিকদের বৈঠকের পর শ্রমিকদের নতুন মজুরি ১৭০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ মজুরি মেনে নিয়ে আগামীকাল রোববার (২৮ আগস্ট) থেকে কাজে যোগ দেবেন শ্রমিকরা।
শনিবার (২৭ আগস্ট) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ চা-শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, আমরা আগেই বলেছিলাম প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন, আমরা তা মেনে নেব। প্রধানমন্ত্রী ১৭০ টাকা নির্ধারণ করেছেন, আমরা এটা মেনে নিচ্ছি। আগামীকাল থেকে কাজে যোগদান করব।
এদিকে নতুন মজুরি নির্ধারণ হওয়ার খবরে তাৎক্ষণিক আনন্দ মিছিল করেছেন চা-শ্রমিকরা। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল চৌমোহনা চত্বরে হাজারো চা-শ্রমিকদের উল্লাস করতে দেখা যায়। চা-শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে আনন্দ মিছিল করেন এবং একে অপরকে মিষ্টি খাওয়ান। তাদের দাবিকৃত মজুরির একটি সুন্দর সমাধান হওয়ায় এখন কাজে ফিরবেন বলে জানান তারা।
চা-শ্রমিক দুলাল হাজরা বলেন, প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দিয়েছেন, আমরা তা মেনে নেব। আমরা এখন বাগানের জন্য কাজ করব। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন আমাদের সঙ্গে কথা বলবেন, আমারা আশা করি তিনি আমাদের বাকি দাবিগুলোও মেনে নেবেন।
চা-শ্রমিক সিলা ভূইয়া বলেন, আমরা দীর্ঘদিন ধরে খেয়ে না খেয়ে আন্দোলন করেছি। এখন প্রধানমন্ত্রী আমাদের মজুরি ১৭০ টাকা দিয়েছেন। আমরা খুশি। কাল থেকে আমরা কাজে নামব।
উল্লেখ্য, দেশের ১৬৭টি চা-বাগানে শ্রমিকের সংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। বর্তমান দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন তারা। গত ৯ আগস্ট এ আন্দোলন শুরু হয়। শুরুতে কয়েকদিন কেবল চার ঘণ্টা করে কর্মবিরতি পালন করা হয়। সে সময় মজুরি বৃদ্ধি ও মজুরি চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে শ্রমিক ইউনিয়নগুলোর পক্ষ থেকে বাগান মালিকদের সাত দিনের আলটিমেটাম দেওয়া হয়। কিন্তু মালিকপক্ষ এ সময়ের মধ্যে সমঝোতায় না আসায় ১৩ আগস্ট থেকে লাগাতার পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন শুরু করেন শ্রমিকরা। দীর্ঘদিন কর্মবিরতির পরও শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে কোনো সমাধান না হওয়ায় শনিবার বাগান মালিকদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রধানমন্ত্রী।