রাজধানীর উত্তরায় নির্মাণাধীন বাস র্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পের ক্রেন থেকে ১২০ টন ওজনের গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে পাঁচজন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়নার গ্যাঝুবা গ্রুপ করপোরেশনের (সিজিজিসি) দায় দেখছে তদন্ত কমিটি। তারা নিরাপত্তার বিষয়টি বারবার লঙ্ঘন করেছে।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) সচিবালয়ে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সম্মেলন কক্ষে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান, এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান ও সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তার।
নীলিমা আক্তার বলেন, আমাদের এই তদন্ত প্রতিবেদনেও বলা হয়েছে যে, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সেফটির বিষয়টি অনেকবারই লঙ্ঘন করেছে। এজন্য আমরা বিষয়টি সংশ্লিষ্ট দূতাবাসকে জানাতে চাই। এটা তদন্তে আমরা বলেছি।
অতিরিক্ত সচিব নীলিমা আক্তার বলেন, আমি এক কথায় বলতে চাই, দায় এড়ানোর প্রশ্নই আসে না। বাংলাদেশের নাগরিকদের মূল্যবান জীবন চলে গেছে, এক্ষেত্রে আমরা কোনোরকম কম্প্রোমাইজ করতে চাই না।
তিনি বলেন, এ ঘটনার জন্য কে দায়ী সেটা কিন্তু স্টেপ বাই স্টেপ আমাদের পরীক্ষা করে দেখতে হবে। সবগুলোর সঙ্গে একটা লিগ্যাল কানেকশন আছে। সে জিনিসগুলো আমাদের ফলো করতে হবে। এটা আপনারা এভাবে ভাবার কারণ নাই যে আমরা একটা চাইনিজ কোম্পানিকে দায়ী করে আমাদের দায় ছেড়ে দিচ্ছি। নাগরিকের জীবন মূল্যবান। এটা খুবই দুঃখজনক ঘটনা। এটা এভাবে ছেড়ে দেওয়া যেতে পারে না।
তিনি আরও বলেন, ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে সেজন্য আমরা এই জিনিসগুলোকে পরীক্ষা করে দায়টা ফিক্সড করতে চাচ্ছি যে, কে কতটুকু দায়ী।
এর আগে আজ গার্ডার দুর্ঘটনায় মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির বিষয়টি উঠে এসেছে। ফলে এ প্রকল্পের কার্যক্রমের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শোকজ করেছে তদন্ত কমিটি।
সোমবার (১৫ আগস্ট) রাতে উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন দুর্ঘটনায় পাঁচ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আরবান ট্রান্সপোর্ট অনুবিভাগ) নীলিমা আখতারকে প্রধান করে এ কমিটি গঠন করা হয়।
উল্লেখ্য, সোমবার বিকেল সোয়া ৪টার দিকে উত্তরা ৩ নম্বর সেক্টরের প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে নির্মাণাধীন বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে গার্ডার ছিটকে প্রাইভেটকারের ওপর পড়ে। গার্ডারটি গাড়ির দুই-তৃতীয়াংশ চাপা দেয়। বাম পাশে থাকা দুজন সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। বেঁচে ফেরে হৃদয় ও রিয়া নবদম্পতি। তবে হৃদয়ের বাবা রুবেল মিয়া, বোন ঝরনা বেগম, ফাহিমা আক্তার ও ঝরনার দুই শিশুসন্তান ঘটনাস্থলে মারা যায়।