বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া
ঢাকা: বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমেদ, সাংগঠনিক সম্পাদক ইলিয়াস আলীসহ দলের সকল নিখোঁজ নেতাকর্মীদের সন্ধান চান বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।
রোববার (১০ মে) বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এ সন্ধান চান।
বিবৃতিতে খালেদা জিয়া বলেন, সালাহউদ্দিন আহমেদকে রাজধানীর উত্তরার বাসা থেকে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ধরে নিয়ে যাওয়ার দুই মাস পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। আমি সরকারের কাছে তার সন্ধান দাবি করছি।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের শাসনামলে বিএনপির অন্যতম সাংগঠনিক সম্পাদক সাবেক এমপি ইলিয়াস আলী, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর বিএনপি নেতা চৌধুরী আলম, সাবেক সংসদ সদস্য লাকসাম বিএনপি নেতা সাইফুল ইসলাম হিরু ও হুমায়ুন কবির পারভেজ এবং জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আনিসুর রহমান তালুকদার খোকন ও সিলেটের ছাত্রনেতা ইফতেখার আহমদ দিদারসহ বিরোধী দলের বহু নেতাকর্মীকে বলপূর্বক গায়েব করে ফেলা হয়েছে।
খালেদা জিয়া বলেন, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার পর দীর্ঘ দিনেও তাদের আর কোনো সন্ধান পাওয়া যায়নি। জানা যায়নি তাদের ভাগ্যে কি ঘটেছে। নির্ঘুম রাত কাটছে তাদের পরিবার-পরিজনদের।
তিনি বলেন, “গুম করে ফেলা এসব নেতাকর্মী ও নাগরিকদের স্বজনেরা তাদের প্রিয়জনের ফিরে আসার প্রত্যাশায় প্রহর গুনছেন। তারা জানেন না তাদের নিখোঁজ স্বজনেরা আটক অবস্থায় বিনা বিচারে হত্যার শিকার হয়েছেন কি-না।
তিনি আরও বলেন, একই পটভূমিতে সালাহউদ্দিনের জন্য তার পরিবারের এবং আমাদের সকলের উৎকন্ঠা দিন দিন আরো গভীর হচ্ছে। আমরা বারংবার তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার দাবি করে আসছি। তার স্ত্রী, প্রাক্তন সংসদ সদস্য হাসিনা আহমেদ প্রধানমন্ত্রীর কাছে বারবার আবেদন করছেন তার স্বামীকে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সালাহউদ্দিনকে নিয়ে নিষ্ঠুর কটাক্ষ করলেও তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার কোনো উদ্যেগ নেননি। সালাহ উদ্দিনের নিখোঁজ হওয়ার পর তার স্ত্রী থানায় মামলা করতে গেলেও মামলা নেওয়া হয়নি। যদিও পুলিশ নিজে থেকে একটা জিডি করেছে, কিন্তু উচ্চ আদালতের নির্দেশনা সত্বেও তার সন্ধান আজও দেওয়া হয়নি।
খালেদা জিয়া বিবৃতিতে বলেন, সালাহ উদ্দিন বিএনপির মতো একটি বৃহত্তম রাজনৈতিক দলের অন্যতম যুগ্ম মহাসচিব ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী, তার মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ নাগরিককে দীর্ঘদিন গায়েব করে রেখে যদি সরকার ও রাষ্ট্রীয় প্রশাসন নির্বিকার থাকতে পারে তাহলে সাধারণ নাগরিকদের নিরাপত্তা কোথায় ? দেশে আইন ও প্রাতিষ্ঠানিকতা কি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে ? কাউকে কি কখনো কোনো কিছুর দায় নিতে বা জবাবদিহি করতে হবে না?
তিনি বলেন, “আমি আবারো দাবি জানাচ্ছি, সালাহউদ্দিনকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তার পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হোক। দাবি করছি, সকল নাগরিকের বেঁচে থাকার অধিকার, নিরাপত্তা ও ন্যায়বিচার পাবার সুযোগ নিশ্চিত করা হোক। দাবি জানাচ্ছি, সর্বস্তরে স্বেচ্ছাচারিতার বদলে আইনের শাসন ও প্রাতিষ্ঠানিক রীতি-নীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করা হোক। দাবি করছি, আইনের প্রয়োগ, তদন্ত ও বিচারিক ক্ষেত্রে নৈরাজ্যের অবসান ঘটিয়ে শৃঙ্খলা ও নিয়ম-নীতি ফিরিয়ে আনা হোক।”