রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের ফ্লাইওভারের গার্ডার চাপায় প্রাইভেটকারে থাকা শিশুসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন দুইজন। তাদের অবস্থাও আশঙ্কাজনক।
জানা গেছে, প্রাইভেটকারে একই পরিবারের সাত সদস্য ছিলেন। এদের মধ্যে ৫ জন মারা গেছেন। তারা হলেন- রুবেল (৬০), ফাহিমা (৪০), ঝরনা (২৮), জান্নাত (৬) ও জাকারিয়া (২)। ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়েছে।
একই দুর্ঘটনার শিকার হলেও বেঁচে আছেন ২ জন। তারা আহত হয়েছেন। এ দুজন হলেন হৃদয় ও রিয়া মনি। তারা গত শনিবার বিয়ে করেছেন। আহত অবস্থায় তাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিকেল ৪টা ২০ মিনিটের দিকে উত্তরা জসীম উদ্দীন এলাকায় আড়ংয়ের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। দুর্ঘটনার পর প্রাইভেটকার থেকে নিহতদের কোনোভাবেই বের করা যাচ্ছিল না। গার্ডারের নিচে প্রাইভেটকারটি চাপা পড়ে থাকায় মরদেহ বের করতে পারছিলেন না ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। পরে এক্সক্যাভেটর দিয়ে গার্ডার সরিয়ে মরদেহগুলো উদ্ধার করা হয়।
ফায়ার সার্ভসের ঢাকা জোন-৩ উপ সহকারী পরিচালক সাইফুজ্জামান বলেন, ১৫০ টন ওজনের গার্ডার হওয়ায় উদ্ধার কাজ শুরু করা যায়নি। পরে এক্সক্যাভেটর আনা হয়। এক্সক্যাভেটর আনতে দেরি হওয়ায় উদ্ধার কাজে বিলম্ব হয়। তিন ঘণ্টা পর এক্সক্যাভেটর দিয়ে গার্ডার একটু উঁচু করে প্রাইভেটকারের ভেতর থেকে পাঁচজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বিআরটি প্রকল্পের জন্য নির্মিত গার্ডার একটি ক্রেন দিয়ে সরানো হচ্ছিল। এসময় গার্ডারটি হঠাৎ করে রাস্তায় চলমান প্রাইভেট কারের ওপর পড়ে যায়। গার্ডারটি ক্রেন থেকে ছুটে যায়নি, বরং ক্রেনের একপাশ উল্টে যায়।
ধারণা করা হচ্ছে ক্রেনটির ধারণক্ষমতা কম ছিল কিংবা চালক ভুলভাবে সেটি অপারেট করেছেন।
এদিকে দুর্ঘটনার পর উত্তরা এলাকায় যান চলাচল বন্ধ থাকায় তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। যানজট নিরসন এবং দুর্ঘটনাকবলিত প্রাইভেটকারটি সরিয়ে নিতে পুলিশ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
এর আগে গত ১৫ জুলাই গাজীপুরে এই বিআরটি প্রকল্পের ‘লঞ্চিং গার্ডার’ চাপায় এক নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন। ওই দুর্ঘটনায় এক শ্রমিক ও একজন পথচারী আহত হয়েছিলেন।
দুর্ঘটনার পর প্রকল্প এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারে পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে বিভিন্ন মহলে আলোচনা হয়। তারপরও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এর মধ্যেই আজ এ দুর্ঘটনা ঘটল।