বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর যেকোনো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি রাজপথে মোকাবিলা করা হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, ‘আমরা রাজপথের পুরাতন খেলোয়াড়; বিএনপি তো এই পথে নতুন। আসুন রাজপথে মোকাবিলা হবে, ফয়সালা হবে।’
বিএনপিকে আগুন নিয়ে না খেলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আগুন নিয়ে খেলতে আসলে পরিণাম হবে ভয়াবহ।
শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিবের ৯২তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার (৮ আগস্ট) সকালে রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বঙ্গমাতার সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী ও দলের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা জানান ওবায়দুল কাদেরসহ আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে ১ মিনিট নিরবতা পালন এবং বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও ১৫ আগস্টের হত্যাযজ্ঞে শহীদদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করেন। এ সময় জাতির অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করা হয়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু থেকে জাতির পিতা হতে পেরেছেন তার পাশে সহযোদ্ধা, সহযাত্রী হিসেবে শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের মতো মহীয়সী নারী ছিলেন বলেই। তার মতো প্রজ্ঞা ও ধৈর্যশীল নারী না থাকলে একটি জাতিকে স্বাধীনতা এনে দেয়া জাতির পিতার জন্য দুরূহ হতো।
দিবসটি উপলক্ষে স্বাস্থ্য সুরক্ষাবিধি মেনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বনানী কবরস্থানে কোরানখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
দিবসটিতে সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন শ্রদ্ধা নিবেদন, আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন কর। এছাড়া বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ছাড়াও বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করছে।
বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
বঙ্গমাতা ১৯৩০ সালের ৮ আগস্ট তৎকালীন গোপালগঞ্জ জেলার (তৎকালীন মহকুমা) টুঙ্গিপাড়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার ডাকনাম ছিল রেণু। বাবার নাম শেখ জহুরুল হক, মায়ের নাম হোসনে আরা বেগম। এক ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট কালরাতে তিনি জাতির পিতার হত্যাকারীদের হাতে নির্মমভাবে শাহাদাৎবরণ করেন।
বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মধ্যদিয়ে স্বাধীনতা লাভ করে বাংলাদেশ। এ লড়াই-সংগ্রাম-আন্দোলনের নেপথ্যে প্রেরণাদাত্রী ছিলেন ফজিলাতুন নেছা মুজিব। তিনি বঙ্গবন্ধুর গোটা রাজনৈতিক জীবনে ছায়ার মতো অনুসরণ করে তার প্রতিটি কাজে প্রেরণার উৎস হয়ে ছিলেন। বাঙালি জাতির মুক্তির সনদ ছয় দফা ঘোষণার পর বঙ্গবন্ধু যখন বারবার পাকিস্তানি শাসকদের হাতে বন্দি জীবনযাপন করছিলেন, তখন আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের কাছে ছুটে যেতেন। তিনি তাদের বঙ্গবন্ধুর বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা পৌঁছে দিতেন ও লড়াই-সংগ্রাম চালিয়ে যেতে অনুপ্রেরণা যোগাতেন।
আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুর প্যারোলে মুক্তি নিয়ে যখন কিছু কুচক্রী স্বাধীনতা সংগ্রামকে বিপন্ন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছিল, তখন প্যারোলে মুক্তির বিপক্ষে বেগম মুজিবের দৃঢ়চেতা অবস্থান বাংলার মুক্তি সংগ্রামকে ত্বরান্বিত করেছিল। স্বামী বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ছায়ার মতো অনুসরণ করা বেগম মুজিব জীবনে অনেক ঝুঁকিপূর্ণ কাজ করেছেন। এজন্য অনেক কষ্ট-দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তাকে।
এদেশের মানুষের আন্দোলন-সংগ্রামে বেগম মুজিব যে কর্তব্যনিষ্ঠা, দেশপ্রেম, দূরদর্শী চিন্তা, বুদ্ধিমত্তা ও সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তার ফলে জাতির পিতার পাশাপাশি তিনি আজ বঙ্গমাতার আসনে অধিষ্ঠিত। এ দেশের রাজনীতিতে তার অনন্য সাধারণ ভূমিকার জন্য চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবেন।