ডিজেল, কেরোসিন, অকটেন ও পেট্রোলের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে মশাল মিছিল করেছে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা।
শুক্রবার (৫ আগস্ট) দিবাগত রাত ২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সন্ত্রাসবিরোধী রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশ থেকে শুরু হয়ে মশাল মিছিলটি আশপাশের এলাকা প্রদক্ষিণ করে।
শুক্রবার রাত ১০টার দিকে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ঘোষণা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে সরকার। এতে বলা হয়, বিশ্ববাজারের সঙ্গে জ্বালানি তেলের মূল্য সমন্বয় করতেই ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রোল এবং অকটেনের নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে।
নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ডিজেল ও কেরোসিনের লিটার ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেনের লিটার ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রোলের লিটার ৮৬ থেকে করা হয়েছে ১৩০ টাকা। শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে জ্বালানি তেলের বর্ধিত দাম কার্যকর হবে।
গত ছয় মাসে (ফেব্রুয়ারি ২২ থেকে জুলাই ২০২২ পর্যন্ত) জ্বালানি তেল বিক্রয়ে (সকল পণ্য) ৮০১৪.৫১ কোটি টাকা লোকসান দিয়েছে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। আন্তর্জাতিক তেলের বাজার পরিস্থিতির কারণে বিপিসির আমদানি কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে মূল্য সমন্বয় অপরিহার্য হয়ে পড়েছিল।
বিশ্ব বাজারে জ্বালানি তেলের ঊর্ধ্বগতির কারণে পার্শ্ববর্তী দেশসহ বিভিন্ন দেশ নিয়মিত তেলের মূল্য সমন্বয় করে থাকে। গত ২২ মে কলকাতায় ডিজেলের মূল্য প্রতি লিটার ৯২.৭৬ রুপি এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ১০৬.০৩ রুপি নির্ধারণ করে ভারত সরকার, যা এখনও বিদ্যমান।
এই মূল্য বাংলাদেশি টাকায় (১ রুপি সমান গড় ১.২৩ টাকা ধরে) যথাক্রমে ১১৪.০৯ টাকা (ডিজেল) এবং ১৩০.৪২ টাকা (পেট্রোল)। অর্থাৎ কলকাতার তুলনায় বাংলাদেশে ডিজেলের মূল্য লিটার প্রতি ৩৪.০৯ টাকা এবং পেট্রোল লিটার প্রতি ৪৪.৪২ টাকা কমে বিক্রয় হচ্ছিল। মূল্য কম থাকায় তেল পাচার হওয়ার শঙ্কাও ছিল।
এর আগে, শুক্রবার বিকেলে রাজধানীর বারিধারায় সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গ্যাস, বিদ্যুৎসহ জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির ইঙ্গিত দেন।
তিনি বলেন, ‘বিশ্ববাজারে দাম বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষাপটে ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে আসার সময় এসেছে। বিশ্ব বাজারের সঙ্গে এখন দাম সমন্বয় না করলে অনেক ক্ষতি হয়ে যাবে।’
নসরুল হামিদ আরও বলেন, ‘জনবান্ধব আওয়ামী লীগ সরকার সবসময় আমজনতার স্বস্তি ও স্বাচ্ছন্দ্য বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়। যতদিন সম্ভব ছিল ততদিন সরকার জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধির চিন্তা করেনি। অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে অনেকটা নিরুপায় হয়েই কিছুটা এডজাস্টমেন্টে যেতে হচ্ছে।’
২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে সরকার জ্বালানি তেলের দাম কমিয়ে দিয়েছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে সে অনুযায়ী জ্বালানি তেলের মূল্য পুনঃবিবেচনা করা হবে।
এর আগে গত নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়েছিল।