শুরুটা করেছিলেন তামিম-লিটন, শেষটা করলেন মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিক। তিন বছর পর মাঠে ফেরা বিজয়ও খেল দেখালেন। স্বাগতিক জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারের পর প্রিয় ফরম্যাটে খেলতে নেমেই চেনা ছন্দে বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডেতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ২ উইকেটের বিনিময়ে ৩০৪ রানের বড় টার্গেট দাঁড় করিয়েছে টিম টাইগার্স। ব্যাট করতে নামা পাঁচ ব্যাটসম্যানের চার জনই ফিফটির দেখা পেয়েছেন। পরিসংখ্যান বলছে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে এটি বাংলাদেশের পঞ্চম সর্বোচ্চ সংগ্রহ। এছাড়া আরেকটি চমকপ্রদ তথ্য হচ্ছে, স্বাগতিকদের বিপক্ষে তিনশোর্ধ্ব ইনিংস খেলে কখনো হারেনি বাংলাদেশ।
এর আগে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী শুরু করেছিল বাংলাদেশ। ইনিংসের প্রথম দুই ওভারে মাত্র ৪ রান তুলেছিল সফরকারীরা। জিম্বাবুয়ের ৪৯তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই মেইডেন দেন ভিক্টর নিয়াউচি। সতর্ক শুরুর পর ধীরে ধীরে খোলস ছেড়ে বেরিয়ে বাউন্ডারি দাগান দুই ওপেনার। প্রথম পাওয়ারপ্লেতে দলীয় সংগ্রহ পঞ্চাশ ছাড়ায়। যদিও সাবধানী ব্যাটিংয়ে একশ ছুঁতে পেরিয়ে যায় ২৪ ওভার। লাল-সবুজের উদ্বোধনী জুটি ভাঙে দলীয় ১১৯ রানে।
দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও লিটন দাস দুজনই ফিফটির দেখা পেয়েছেন। ব্যক্তিগত ফিফটির পর যদিও ইনিংস লম্বা করতে পারেননি বাংলাদেশ অধিনায়ক। তবে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি রেকর্ড গড়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারের ৫৪তম পঞ্চাশ ছোঁয়ার দিনে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে ৮ হাজার রানের মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম। এছাড়া ওয়ানডে ইতিহাসে ৩৩তম ক্রিকেটার হিসেবে এমন রেকর্ড গড়েন দেশসেরা এ ব্যাটার।
তামিমের পর ফিফটি ছুঁয়ে সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে ছিলেন লিটন দাস। তখনই আসে দুঃসংবাদটা। সিকান্দার রাজার করা ৩৪তম ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নেয়ার জন্য ছুটছিলেন, ক্রিজে পৌঁছানোর আগেই ব্যথা অনুভব করলে মাঠে শুয়ে পড়েন লিটন। পরে স্ট্রেচারে করে মাঠ ছাড়তে হয়েছে টাইগার ওপেনারকে। ধারণা করা হচ্ছে, পেশীতে টানের ফলেই চোট পেয়েছেন।
রিটায়ার্ড হার্ট হওয়ার আগে ৮৯ বলে ৮১ রান করেছেন লিটন। এর আগে ক্যারিয়ারের সপ্তম ফিফটি ছুঁয়েছিলেন ৭৫ বলে। যদিও ফিফটি পূর্ণ করার পরই বোলারদের ওপর চড়াও হন এ ওপেনার। শেষ ১৪ বলে করেছিলেন ২১ রান। এদিন সপ্তম বাংলাদেশি হিসেবে ক্রিকেটের তিন ফরম্যাটে ৫ হাজার রান পূর্ণ করেছেন লিটন।
এ নিয়ে একই ম্যাচে দুই দলের দুই ক্রিকেটারকে মাঠ ছাড়তে হলো। এর আগে জিম্বাবুইয়ান অলরাউন্ড স্পিনার রায়ান বার্ল নিজের দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বল করার পরই পাঁজরে হাত দিয়ে বসে পড়েন, চোখেমুখে ছিল অস্বস্তি। কিছুক্ষণ মাঠে বসে থাকার পর ফিজিওর সঙ্গে মাঠ ছেড়ে গেছেন বার্ল।
লিটনের পর বাংলাদেশ ইনিংসকে টেনে তোলেন তিন বছর পর ওয়ানডেতে ফেরা এনামুল হক বিজয় এবং মুশফিকুর রহিম। তিন বছর পর ওয়ানডে দলে ফিরেই নিজের ‘জাত’ চেনান বিজয়। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজে প্রথম ওয়ানডেতে ৬২ বলে ৭৩ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস খেলেন টপঅর্ডার এ ব্যাটার।
ব্যক্তিগত ৭৩ রানের মাথায় বিজয় ক্যাচ আউটের ফাঁদে পড়লেও পথ হারায়নি বাংলাদেশ। ছুটি থেকে ফেরা মুশফিকও ছিলেন দারুণ ছন্দে। শেষ পর্যন্ত ৪৯ বলে ৫২ রানে অপরাজিত ছিলেন তিনি। এছাড়া শেষ দিকে ব্যাট করতে নেমে ছোটখাটো ক্যামিও ইনিংস খেলেন মাহমুদউল্লাহ। ১২ বলে ৩ চারের মারে করেন ২০ রান।