মহাসড়কে ডাকাতি ও ধর্ষণের মতো ঘটনা প্রতিরোধে প্যানিক বাটন চান বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম। বৃহস্পতিবার (৪ আগস্ট) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, রাজধানী ও মহাসড়কের বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ রোধে পুলিশ তৎপর রয়েছে। নানা ধরনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। যে কোনো ডাকাতির ঘটনাকে পুলিশ গুরুত্ব দিয়ে থাকে। টাঙ্গাইলের ঘটনায় সেখানকার পুলিশের পাশাপাশি গোয়েন্দা পুলিশ ডাকাতদের গ্রেফতারে কাজ করছে। রাজধানীতেও অনেক সময় বাস ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সেসব অপরাধ প্রতিরোধে আমরা বাসে প্যানিক বাটন বসাতে বলেছি মালিকদের। ব্যয় ও ব্যবস্থাপনার অজুহাতে অনেকে তা করছেন না।
ডাকাতি প্রতিরোধের ব্যবস্থা হিসেবে তিনি বলেন, মহাসড়ক এবং ঢাকায় এত পরিমাণ যানবাহন চলাচল করে যেসব যানবাহন থামিয়ে চেক করা অসম্ভব একটি কাজ।
মহাসড়কে আগে বেশি বাস ডাকাতির ঘটনা ঘটত। ডাকাতি রোধে আগে বাসের স্টার্টিং পয়েন্ট ও বিভিন্ন কাউন্টারে ছবি তুলে রাখার ব্যবস্থা ছিল, সেটি এখনো চলছে।
তিনি আরও বলেন, আশুলিয়া, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন এলাকায় আমাদের বোনেরা গার্মেন্টসে কাজ শেষে রাতের বেলায় যাতায়াত করেন। এসব এলাকায় চলমান বাসের নিরাপত্তার জন্য আমরা প্যানিক বাটন বসানোর উদ্যোগ নিয়েছিলাম। ঢাকার কিছু বাসে প্যানিক বাটন স্থাপন করা গেলেও বাইরে অগ্রগতি নেই।
ডিএমপি কমিশনার জানান, ডাকাতির ঘটনায় প্যানিক বাটনের সুফল পাওয়া যায়। কারণ বাটনটি ড্রাইভারের হাতের কাছে থাকে, কোনো ডাকাতির ঘটনা ঘটলে ড্রাইভার প্যানিক বাটনে চাপলেই পুলিশের কাছে তথ্য চলে যায়।
এ ছাড়াও বাসে একা পেয়ে নারী যাত্রীর শ্লীলতাহানিতে ড্রাইভার ও হেলপাররা যুক্ত থাকে। তখন অবশ্য প্যানিক বাটনের সুফল মিলবে না। যেসব এলাকায় নারী যাত্রী বেশি সেসব এলাকার বাসের ড্রাইভার ও হেলপারের ছবিসহ বৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হবে বলে জানান ডিএমপি কমিশনার।
‘প্যানিক বাটন’
বাসের কোনো এক জায়গায় একটা প্যানিক বাটন থাকবে। যার অবস্থান বাসের চালক ও তার সহযোগী জানবেন। বিপদে পড়লে তারা এ বাটনে চাপ দেবেন। জরুরি প্রয়োজনে ‘প্যানিক বাটনে’ চাপ দেয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনটি বার্তা যাবে। একটি জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ, দ্বিয়তীয় বার্তাটিতে বাসটির জিপিআরএস লোকেশনের তথ্য পাবেন সংশ্লিষ্ট থানা বা পুলিশ সুপার, তৃতীয় বার্তাটি পাবেন বাসের মালিক বা ম্যানেজার। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ বার্তাটি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ইউনিটের সঙ্গে যোগাযোগ করে সর্বশেষ লোকেশন নিয়ে ব্যবস্থা নিতে বলবে। পুলিশ বাসটিকে অনুসরণ করে ডাকাতদের গ্রেফতার করবে।
এ ছাড়া ‘প্যানিক বাটন’ সংযুক্ত করা পরিবহনে যাত্রীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হওয়া ছাড়াও আরও কিছু সুবিধা মিলবে। রিয়েল টাইম ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে সবসময় গাড়ির অবস্থান নিশ্চিত করা যাবে। মালিক ও পুলিশ গাড়িটির রুট ট্র্যাক করতে পারবে। মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে বাসটির সব তথ্য সংগ্রহ করা যাবে। গাড়িটির মাইলেজ রিপোর্ট পাওয়া যাবে। গাড়িটি ওভার স্পিড হলে চালককে সতর্ক করা যাবে।