ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না প্রায় ৭৪ হাজার শিক্ষার্থী। গতকাল বৃহস্পতিবার গুচ্ছের বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর এমন বিশ্লেষণ উঠে এসেছে। এতে দেখা গেছে, বিজ্ঞান বিভাগের ভর্তি পরীক্ষায় ৮৫ হাজার ৫৮২ জন শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হলেও মোট ১১ হাজার ৭১৬ জন ভর্তির সুযোগ পাবেন। সেই হিসেবে উত্তীর্ণ হয়েও ৭৩ হাজার ৮৬৬ জন ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবেন না।
শিক্ষার্থীদের অনেকে জানান, গ্রামের বেশির ভাগ পরিবারের শিক্ষার্থী আছেন যারা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ না পেলে তাদের শিক্ষাজীবনই অনিশ্চিত হয়ে যাবে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, গুচ্ছভুক্ত ২২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে বিজ্ঞান বিভাগে যে আসন সংখ্যা রয়েছে তাতে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েও মাত্র ১৪ শতাংশ শিক্ষার্থীই ভর্তির সুযোগ পাবে। বাকি ৮৬ শতাংশ শিক্ষার্থীকে বেসরকারিতে ভর্তি হতে হবে কিংবা খরচের অভাবে পড়াশোনাই বাদ দিতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষাসংক্রান্ত টেকনিক্যাল কমিটির আহ্বায়ক এবং চাঁদপুর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. নাছিম আখতার জানান, গুচ্ছের ‘ক’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার ফলে ৩০ নম্বরের সমান ও বেশি নম্বর পেয়ে ৫৫ দশমিক ৬৩ শতাংশ শিক্ষার্থী অর্থাৎ ৮৫ হাজার ৫৮২ জন উত্তীর্ণ হয়েছেন। এ ছাড়া ৩০ এর নিচে নম্বর পেয়ে ৬৬ হাজার ৭১১ জন শিক্ষার্থী ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য হয়েছেন।
এদিকে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী গুচ্ছভুক্ত ২২ বিশ্ববিদ্যালয়ে মোট ১১ হাজার ৭১৬টি আসন রয়েছে। এর মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০৩০টি, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৫০টি, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৪৫টি, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৩৬০টি, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৩৩টি, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯৭০টি, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫১৫টি, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২৭২টি, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৮৫টি, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৯২টি এবং পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৫০টি আসন রয়েছে।
এ ছাড়া বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪৬০টি, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬৪৯টি, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৭৫টি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটিতে ১০০টি, শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০টি, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৯০টি, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ১২১০টি আসন রয়েছে। গুচ্ছে নতুন করে যুক্ত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হলো-চাঁদপুর বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ঠাকুরগাঁও বিশ্ববিদ্যালয় এবং কিশোরগঞ্জ বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।
একই সাথে প্রাপ্ত ফলের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চলতি বছর ‘ক’ ইউনিটে ৮০ নম্বরের উপরে পেয়েছেন ৫০ জন, ৭০ এর ওপর এক হাজার ৬২১ জন, ৬০ এর ওপর পেয়েছেন ১০ হাজার ৩৪৬ জন, ৫০ এর ওপর ২৯ হাজার ২২২, ৪০ এর ওপর ৫৪ হাজার ৯৭৩, ৩০ এর ওপর পেয়েছেন ৮৫ হাজার ৫৮২ জন। আর ফেল করেছেন ৬৬ হাজার ৭১১ জন।
অন্যদিকে প্রকাশিত ফলে এক হাজার ৫৫১ জনের খাতা বাতিল করা হয়েছে। এসব কারণের মধ্যে- বহিষ্কার হয়েছেন ৩ জন, রোল এররের কারণে ২৯ জন এবং সেট/সাবজেক্ট কোড এররের কারণে ১ হাজার ৫১৯ জনের খাতা বাতিল করা হয়েছে।