জিম্বাবুয়ে সফরে অপেক্ষাকৃত নতুন দল নিয়ে গেলেও খুব একটা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে টাইগাররা তা কেউই আশা করেনি। তবে প্রথম টি-টোয়েন্টি মাঠে গড়াতে সবাই অবাক, দলের অভিজ্ঞ মুখদের বিশ্রামে রেখে তারুণ্যে ভরসা করা বাংলাদেশ যেন ছন্নছাড়া। ১৭ রানের হার দিয়ে সিরিজ শুরু করলেও দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ঘুরে দাঁড়িয়েছে টাইগাররা। বলে ব্যাটে দারুণ নৈপুণ্য দেখিয়ে সহজে জিতে নিয়েছে দ্বিতীয় ম্যাচটি।
হারারে স্পোর্টস ক্লাব রোববার (৩১ জুলাই) দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ লিটন দাসের দারুণ অর্ধশতকে ৭ উইকেটের সহজ জয় পেয়েছে। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে সমতায় ফিরল টাইগাররা।
এদিন বল হাতে মোসাদ্দেক হোসেনের পাঁচ উইকেট শিকারে খুব একটা সুবিধা করতে পারেনি স্বাগতিক জিম্বাবুয়ে। সিকান্দার রাজার ৬২ রানের ইনিংস স্বত্বেও নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে মাত্র ১৩৫ রান সংগ্রহ করে তারা। জবাবে লিটন দাসের ৩৩ বলে ৫৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে ভর করে ১৫ বল হাতে রেখেই সাত উইকেটে জয় পায় সফরকারী বাংলাদেশ।
এদিন দুটি পরিবর্তন নিয়ে খেলতে নামে বাংলাদেশ। নাসুম আহমেদ ও তাসকিন আহমেদের জায়গায় সুযোগ পান মেহেদী হাসান ও হাসান মাহমুদ। টস হেরে ফিল্ডিং করতে নেমে জিম্বাবুয়ে শিবিরকে একাই কাঁপিয়ে দেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। ২০ রান দিয়ে তিনি নেন ৫ উইকেট।
ইনিংসের প্রথম ওভারে দুটি উইকেট নেন সৈকত। প্রথম বলে রেগিস চাকাভাকে গোল্ডেন ডাকে ফেরানোর পর ওভারের শেষ বলে সৈকত তুলে নেন ওয়েসলে মেধভেরের উইকেট। নিজের দ্বিতীয় ওভারে আবার বোলিংয়ে এসে সৈকত ফিরিয়ে দেন ক্রেগ আরভিনকে। আরভিন ক্যাচ দেন লিটন দাসকে। তিনি নেন শন উইলিয়ামস ও মিল্টন শুম্বার উইকেটও। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রান করেন উইলিয়ামসম, তা-ও সেটা ৮।
প্রথম ম্যাচের মতো জিম্বাবুয়ের হয়ে এ ম্যাচেও হাল ধরেন সিকান্দর রাজা। ৫৩ বলে ধীরেসুস্থে ৬২ রানের কার্যকরী এক ইনিংস খেলেন তিনি। তার উইকেট নেন মুস্তাফিজুর রহমান। রায়ান বার্ল করেন ৩২ রান। ৩১ বলে ৩ চার মারার পর তাকে আউট করেন হাসান মাহমুদ। শেষ দিকে লুক জংউই ১১ ও মাসাকাদজা ৬ রান করেন। বাংলাদেশের হয়ে মোসাদ্দেক ৫ উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান ফিজ ও হাসান মাহমুদ। মাসাকাদজা হন রানআউটের শিকার।
১৩৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে লিটনের ব্যাটে ভালো সূচনা পায় টাইগাররা। প্রথম ম্যাচের মতো এদিনও উইকেটের চারপাশে স্ট্রোকের ফুলঝুরি ছোটান তিনি। তবে লিটন জ্বলে উঠলেও ফের ব্যর্থ হয়েছেন মুনিম শাহরিয়ার। ফের একবার দৃষ্টিকটু ভাবে বোল্ড হয়ে গেছেন। তার ৮ বলে ৭ রানের ইনিংসে আত্মবিশ্বাসের ছিটেফোঁটা ছিল না। উল্টো প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে তার ব্যাটিং টেকনিক।
মুনিম ফিরলেও লিটন চেনা ছন্দেই ব্যাট করছিলেন। এরই মধ্যে তুলে নেন টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ অর্ধশতক। তবে অর্ধশতক তুলে নেওয়ার পর আর বেশিক্ষণ টেকেননি তিনি। শন উইলিয়ামসের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরার আগে ৩৩ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৫৬ রান করেন তিনি। অবশ্য আউট হওয়ার পর তার অভিব্যক্তি বলছিল আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে খুব একটা খুশি হননি তিনি।
এ সময়ে বাংলাদেশ জোড়া ধাক্কা খায়। লিটন ফেরার তিন বল পর আউট হয়ে সাজঘরে ফেরেন এনামুল হকও। দলীয় রান তখন ৮১। ১৫ বলে ১৬ রান করে সিকান্দার রাজার শিকারে পরিণত হন তিনি।
জোড়া ধাক্কা খেলেও এরপর অবশ্য আর বিপদ হতে দেননি আফিফ হোসেন ও নাজমুল হোসেন শান্ত। দুজনের সাবধানী ব্যাটিংয়ে সহজেই লক্ষে পৌঁছে যায় টাইগাররা। ২৮ বলে এক চার ও এক ছয়ে আফিফ অপরাজিত থাকেন ৩০ রানে। আরেক অপরাজিত ব্যাটার শান্ত ২১ বলে করেন ১৯ রান।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে এনগারভারা, উইলিয়ামস ও সিকান্দার রাজা একটি করে উইকেট লাভ করেন। ২০ রানে ৫ উইকেট নিয়ে এদিন ম্যাচ সেরা হয়েছেন মোসাদ্দেক হোসেন।
সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচটি একই ভেন্যতে অনুষ্ঠিত হবে ২ আগস্ট।