করোনাকালে জালিয়াতির অভিযোগে গ্রেফতার রিজেন্ট হাসপাতাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান সাহেদ করিমের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা একটি মামলায় তাকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) এ আদেশ দেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামান ও বিচারপতি কে এম জাহিদ সারওয়ার কাজলের হাইকোর্ট বেঞ্চ ঋণের নামে জালিয়াতি করে পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) পৌনে ৩ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় তাকে জামিন দিয়েছেন।
আদেশের পরে দুদক আইনজীবী খুরশিদ আলম খান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
২০২০ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর ঋণের নামে জালিয়াতি করে পদ্মা ব্যাংকের (সাবেক ফারমার্স ব্যাংক) পৌনে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ করিম, বাবুল চিশতীসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক (দুর্নীতি দমন কমিশন)।
দুদকের প্রধান কার্যালয়ের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শাহাজাহান মিরাজ বাদী হয়ে কমিশনের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১-এ মামলা করে। দুদক জানায়, পরস্পর যোগসাজশে অসৎ উদ্দেশ্যে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিশ্বাসভঙ্গ করে অর্থ স্থানান্তর ও রূপান্তরের মাধ্যমে ঋণের নামে পদ্মা ব্যাংকের এক কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন, যা চলতি বছরের ১৫ জুলাই পর্যন্ত সুদ-আসলে দাঁড়ায় দুই কোটি ৭১ লাখ টাকা। দুদক আসামিদের বিরুদ্ধে পৌনে তিন কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনেছে।
মামলায় অন্যতম আসামি হলেন- সাবেক ফারমার্স ব্যাংকের (বর্তমানে পদ্মা ব্যাংক) উদ্যোক্তা পরিচালক ও ক্রেডিট কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক চিশতী ওরফে বাবুল চিশতী।
অন্য দুই আসামি হলেন: বাবুল চিশতীর ছেলে রাশেদুল হক চিশতী ও রিজেন্ট হাসপাতালের এমডি মো. ইব্রাহিম খলিল। তাদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/১০৯ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন-২০১২-এর ৪ ধারায় মামলাটি দায়ের করা হয়।
এর আগে গত ১৭ এপ্রিল আরেক মামলার অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। তার বিরুদ্ধে অবৈধভাবে ১ কোটি ৬৯ লাখ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগ আনা হয়।
ওইদিন রোববার সকালে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১০ এর বিচারক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম অভিযোগ গঠন করেন এবং আগামী ২০ মে সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ নির্ধারণ করেন।
গত বছরের ১ মার্চ দুদকের উপপরিচালক ফরিদ আহমেদ পাটোয়ারী বাদী হয়ে কমিশনের সমন্বিত ঢাকা জেলা কার্যালয়-১ এ মামলাটি দায়ের করেন। তদন্ত শেষে চলতি বছরের ২ ফেব্রুয়ারি দুদক আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়।
দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে ২০২০ সালের ১৫ জুলাই সাতক্ষীরার দেবহাটা থেকে সাহেদকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে সারা দেশে তার বিরুদ্ধে ৩৬টির বেশি মামলা দায়ের হয়।
ওই বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া মামলায় আদালত সাহেদকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন। এর আগে ২০১০ সালের ১৮ আগস্ট চেক জালিয়াতির মামলায় সাহেদের ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫৩ লাখ টাকা জরিমানা হয়েছিল।