পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট পাঞ্জাব প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পদে চৌধুরী পারভেজ ইলাহির নাম ঘোষণা করেছে। এর ফলে হামজা শাহবাজের মুখ্যমন্ত্রিত্বের অবসান ঘটল। পাকিস্তানের প্রধান বিচারপতি উমর আতা বানদিয়ালের নেত্বত্ব তিন সদস্যের বেঞ্চ মঙ্গলবার এই রায় ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে গত কয়েক দিন ধরে চলা উত্তেজনাকর পরিস্থিতির অবসান হলো। সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দলের হাতে আবার পাঞ্জাবের নেতৃত্ব ফিরে এলো। আর ক্ষমতাসীন জোটের জন্য এটি ভয়াবহ বিপর্যয়কর ঘটনা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে।
ক্ষমতাসীন পাকিস্তান মুসলিম লিগ নওয়াজের প্রতিনিধিরা অবশ্য আদালতে অনুপস্থিত থাকেন।
ওই বেঞ্চ আরো আদেশ দেন যে পাঞ্জাবের গভর্নর বালিগ উর রেহমান রাত ১১.৩০-এ ইলাহিকে শপথ পড়াবেন। আরো ঘোষণা করা হয় যে, হামজা শাহবাজের দেয়া সব নিয়োগ বাতিল হয়ে যাবে।
গত শুক্রবার পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচনে হামজার চেয়ে ১০ ভোট বেশি পেয়েছিলেন ইলাহি। কিন্তু ভোটাভুটির আগে ইলাহির দল পিএমএল-কিউ (ইমরান খানের দল পিটিআইয়ের মিত্র) প্রধান চৌধুরী শুজ্জাত ডেপুটি স্পিকার দোস্ত মোহাম্মদ মাজারির কাছে এক চিঠি লিখে জানান যে তার দল ইলাহিকে ভোট দেবে না। তিনিসহ তার দলের মোট তিনজন হামজাকে ভোট দেন। কিন্তু দলটির বাকি ১০ সদস্য ইলাহিকে ভোট দেন। কিন্তু ডেপুটি স্পিকার তিন ভোট গ্রহণ করে ১০ ভোট বাতিল করে দেন। ফলে হামজা তিন ভোটে জিতে যান। মঙ্গরবার আদালত মাজারির ওই সিদ্ধান্ত অবৈধ হিসেবে ঘোষণা করেন।
ক্ষমতাসীন জোট এ নিয়ে ফুল কোর্ট বসানোর আবেদন জানিয়েছিল। কিন্তু প্রধান বিচারপতি তা খারিজ করে দেন। এর প্রতিবাদে তাদের জোট রায় অনুষ্ঠান বর্জন করে।
পাঞ্জাবে পিটিআই ক্ষমতাসীন হওয়ায় পাকিস্তানের রাজনীতি নতুন মোড় নিলো। ইমরান খানের হাতে এখন দুটি প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ। তিনি এখন আগাম নির্বাচন আয়োজনে তার দাবি আদায়ে আরো সোচ্চার হতে পারবেন।
উল্লেখ্য, মাজারি একসময় আসিফ আলি জারদারির পিপিপির সদস্য ছিলেন। পরে তিনি ইমরান খানের পিটিআইয়ে যোগ দেন। অন্যদিকে শুজ্জাতের সাথে বৃহস্পতিবার দুবার বৈঠক করেছিলেন জারদারি। এই বৈঠকের পরই শুক্রবার শুজ্জাত তার অবস্থান বদল করেন। এদিকে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের রায়ের আগে জেইউআই-এফ প্রধান মাওলানা ফজলুর রহমান তার সাথে তার বাসভবনে সাক্ষাত করেন।
সূত্র : দি নিউজ, ডন, জিও টিভি ও অন্যান্য