সিলেট: চাহিদা অনুযায়ী সিলেটে মিলেছে না বিদ্যুৎ সরবরাহ। ফলে তীব্র লোডশেডিংয়ের কবলে পড়েছে সিলেট। রোববার ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সূচি প্রকাশ করেছে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২। এতে মারাত্মক ভোগান্তির শিকার হবেন বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দারা।
বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশে কমেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ সাশ্রয়ে গত ১৯ জুলাই থেকে সিলেটসহ সারা দেশে এলাকাভিত্তিক ২৪ ঘণ্টায় ১-২ ঘণ্টা করে রুটিন লোডশেডিং করার নির্দেশ দেয় সরকার। এ লক্ষ্যে দিনে ও রাতে দুই ঘণ্টা করে ২৪ ঘণ্টায় মোট চার ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের শিডিউল প্রকাশ করেছিল বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ, সিলেট। কিন্তু তাদের প্রকাশিত শিডিউলে শুরু থেকে বিপর্যয় দেখা দেয়। প্রথম দিন থেকেই সিলেট মহানগরীর সব এলাকায় ৭-৮ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন থাকছে বলে জানা যায়। এর কারণ হিসেবে কর্তৃপক্ষ বলছে- চাহিদার তুলনায় সরবরাহ অর্ধেকের চাইতেও কম হওয়ায় লোডশেডিংয়ের শিডিউলে এমন বিপর্যয়।
এদিকে, মহানগরীতে বিদ্যুৎতের এমন পরিস্থিতি থাকলেও গ্রামাঞ্চলে অবস্থা আরো ভয়াবহ। জেলার অনেক জায়গায় দিনে ও রাতের ২৪ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে মোটের উপর ৪-৫ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ থাকে। ফলে অসহনীয় ভোগান্তিতে রয়েছেন লোকজন।
রোববার বিউবো’র বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এর শিডিউলে দেখা যায়, তাদের আওতায়ভুক্ত এলাকাগুলোর বিভিন্ন স্থানে ১৩ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন থাকার কথাও উল্লেখ করা হয়েছে।
নতুন শিডিউল অনুযায়ী মহানগরীর বালুচর, আরামবাগ, আল-ইসলাহ, নতুন বাজার, গোপালটিলা, আলুরতল, টিবি গেট, সোনারপাড়া, মজুমদারপাড়া, পূর্ব মিরাবাজার, দর্জিপাড়া, খারপাড়া, কুমারপাড়া, নাইওরপুল, ধোপাদিধীরপাড়, ঝরনারপাড়, কুশিঘাট, নয়াবস্তি, টুলটিকর, মিরাপাড়া, মেন্দিবাগ, সাদাটিকর, নোওয়াগাঁও, শাপলাবাগ, মেন্দিবাগ, হকার্স মাকেট, কালীঘাট, আমজাদ আলী রোড, মহাজপট্টি, মাছিমপুর, ছড়ারপার, উপশহর ব্লক-এইচ, আই, জে, ই, এফ, জি, সাদাটিকর, রায়নগর, ঝর্নারপাড়, দর্জিবন্দ, বসুন্ধরা, খরাদিপাড়া, দপ্তরীপাড়া, আগপাড়া, কাজীটুলা, মানিকপীর মাজার, নয়াসড়ক, বারুতখানা, জেলরোড, হাওয়াপাড়া, চারাদিঘীরপাড়, চালিবন্দর, কাষ্টঘর, সোবহানীঘাট, বিশ্বরোড, জেলখানা, বঙ্গবীর, পৌরমার্কেট, শিবগঞ্জ, টিলাগড়, সবুজবাগ, সেনপাড়া, হাতিমবাগ, লামাপাড়া, রাজপাড়া উপশহর ব্লক-এ, বি, সি, ডি, তেররতন, মেন্দিবাগ পয়েন্ট, ডুবড়ীহাওর, নাইওরপুল, ধোপাদিঘীরপাড়, সোবহানীঘাট, বঙ্গবীর যতরপুর, মিরাবাজার, আগপাড়া, ঝেরঝেরিপাড়া, মীরেরচক, মুক্তিরচক, মুরাদপুর, পীরেরচক এলাকাগুলো ২৪ ঘণ্টায় ১১ থেকে ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের মধ্যে পড়বে।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিউবো) সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল কাদির বলেন, সিলেট মহানগরীকে ভাগ করা পাঁচটি ডিভিশনে রোববার) বিকাল ৪টার দিকে চাহিদা ছিল ২০০ মেগাওয়াট। কিন্তু ওই সময় আমরা সরবরাহ পেয়েছি অর্ধেকের চেয়েও কম। বতর্মানে ৯০ মেগাওয়াট বিদ্যুত দিয়ে গ্রাহক সেবা দিতে হচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। তবে আগামী ২-৩ সপ্তাহের মধ্যে এ অবস্থার উন্নতি হতে পারে বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেছেন।