ইউক্রেনের ওডেসা বন্দরে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। কৃষ্ণসাগরের বন্দরগুলোতে পুনরায় শস্য রফতানি চালুর জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর হওয়ার এক দিন পরই এ হামলা চালানো হলো। এর ফলে যুগান্তকারী ওই চুক্তিটি বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন অনেকে।
জাতিসংঘের কর্মকর্তারা শুক্রবার (২২ জুলাই) বলেছিলেন, তারা আশা করেছেন যে চুক্তিটি কয়েক সপ্তাহের মধ্যে কার্যকর হবে। তবে শনিবারের (২৩ জুলাই) হামলার কারণে এটি এখন সম্ভব হবে কি না, তা স্পষ্ট নয়। খবর রয়টার্স।
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীর অপারেশনাল কমান্ড (সাউথ) মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে জানায়, ‘শত্রুরা ক্রুজ মিসাইল দিয়ে ওডেসা বাণিজ্যিক সমুদ্রবন্দরে হামলা চালিয়েছে। দুটি ক্ষেপণাস্ত্র বন্দরের অবকাঠামোতে আঘাত হানে। অন্য দুটি ক্ষেপণাস্ত্র গুলি করে ভূপাতিত করেছে বিমান প্রতিরক্ষা বাহিনী।’
এ হামলার পর রাশিয়া যে তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে, তা নিশ্চিত করতে শুক্রবারের চুক্তিতে মধ্যস্থতাকারী জাতিসংঘ ও তুরস্কের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ইউক্রেনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ হামলাকে ‘আপত্তিকর’ বলে অভিহিত করে কিয়েভে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ব্রিজেট ব্রিঙ্ক বলেন, ‘ক্রেমলিন খাদ্যকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে চলেছে। রাশিয়াকে জবাবদিহি করতে হবে।’
যদিও এ বিষয়ে এখন পর্যন্ত রাশিয়ার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এর আগে, শুক্রবার কৃষ্ণসাগরের বন্দর দিয়ে খাদ্যশস্য রফতানিতে চুক্তি সই করে রাশিয়া ও ইউক্রেন। এতে আন্তর্জাতিক খাদ্যসংকট লাঘব হতে পারে বলে প্রত্যাশা করা হয়। যদিও প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যকার বৈরিতা কমার কোনো আভাস পাওয়া যায়নি।
তুরস্কের ইস্তাম্বুলে আলাদাভাবে যুদ্ধপক্ষগুলো চুক্তিতে সই করে। এ সময় তারা একই টেবিলে বসা থেকেও বিরত ছিল। দুদেশের পতাকা এমনভাবে স্থাপন করা হয়েছিল, যাতে তাদের একই সঙ্গে বসতে না হয়।
এমনকি দুই দেশের প্রতিনিধিরা এ সময়ে করমর্দনও করেননি। তুরস্ক ও জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় দু-মাসের চেষ্টায় চুক্তিটি এ পর্যায়ে এসেছে। এ চুক্তিকে একটি প্যাকেজ আখ্যায়িত করে জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্থনিও গুতেরেস বলেন, এতে ইউক্রেন তাদের খাদ্যশস্য বিদেশে রফতানি করতে পারবে। রাশিয়ার খাদ্যশস্য ও সার রফতানিও সহজ হয়ে যাবে।
যদিও গেল ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের পর রাশিয়ার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে পশ্চিমা দেশগুলো। রাশিয়ার অর্থনীতিকে আটকে দিতে এমন কোনো উপায় নেই, যা হাতছাড়া করেছে তারা।