চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রী হেনস্তার ঘটনায় আগামী চার কার্যদিবসের মধ্যে বিচার করতে না পারলে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস এম মনিরুল হাসান। শুধু তাই নয়, প্রক্টর ও প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যদের পদত্যাগের বিষয়টিও নিশ্চিত করবেন তিনি। এরপরই বুধবার (২০ জুলাই) রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিক্ষোভ থামিয়ে হলে ফিরেছেন ছাত্রীরা।
এর আগে, গত রোববার রাতে বন্ধুর সঙ্গে ঘুরতে বের হয়ে হেনস্তার শিকার হন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রীতিলতা হলের এক ছাত্রী। ওইদিন রাত ১০টার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেন এলাকায় ঘুরতে গেলে পাঁচ তরুণ ওই ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে বলে অভিযোগ উঠে। তার সঙ্গে থাকা বন্ধুকে মারধর করা হয় বলেও প্রক্টর বরাবর লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনা তদন্তে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীদের চারটি হলে রাত ১০টার মধ্যে প্রবেশের নির্দেশনা দেয় প্রশাসন।
এরপরই ছাত্রীদের রাত ১০টার মধ্যে নিজ হলে প্রবেশের নির্দেশনার বিরুদ্ধে ও ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে বুধবার (২০ জুলাই) রাত ১০টার দিকে বিক্ষোভ শুরু করেন ছাত্রীরা।
প্রীতিলতা হলের ৩০-৩৫ ছাত্রী রাত ১০টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রক্টোরিয়াল বডির সদস্যরা এসে তাদের বাঁধা দেন। একপর্যায়ে ছাত্রীরা ওই হলের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় প্রক্টর রেজাউল হকের পদত্যাগ দাবি করেন তারা।
এরপর অন্য ছাত্রীরা বিক্ষোভে যোগ দিলে তারা মিছিল নিয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় ছাত্রীকে যৌন নিপীড়নে জড়িতদের শাস্তি, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত এবং প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে স্লোগান দিতে থাকেন তারা।
একপর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মনিরুল হাসান ঘটনাস্থলে এসে তাদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। পরে তিনি লিখিতভাবে চার কার্যদিবসের মধ্যে অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করার কথা জানান। অন্যথায় পুরো প্রক্টরিয়াল বডিসহ পদত্যাগ করার প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর রাত সাড়ে ১২টায় হলে ফিরে যান ছাত্রীরা।
এদিকে হেনস্তার ঘটনায় অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করে হাটহাজারী থানায় একটি মামলা করেছেন ভুক্তভোগী ছাত্রী। তবে এখন পর্যন্ত ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে চিহ্নিত করতে পারেনি পুলিশ।