ক্যারিয়ারের শেষ ওয়ানডে ম্যাচটা স্মরণীয় করে রাখতে পারলেন না বেন স্টোকস। সতীর্থের বিদায়ী ম্যাচে দারুণ কিছু করে দেখাতে পারলেন না ইংল্যান্ডের অন্যরাও। অসাধারণ এক সেঞ্চুরিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে বড় পুঁজি এনে দিলেন রাসি ফন ডার ডাসেন। ব্যাটে-বলে আলো ছড়ালেন এইডেন মারক্রাম। বড় জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেল প্রোটিয়ারা।
চেস্টার-লি-স্ট্রিটে মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) তিন ম্যাচ সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে দক্ষিণ আফ্রিকার জয় ৬২ রানে। ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ৩৩৩ রানের পুঁজি গড়ে সফরকারীরা, ইংল্যান্ডের মাটিতে যা তাদের সর্বোচ্চ। দলটির ইনিংসে নেই কোনো ছক্কা। পুরুষদের ওয়ানডেতে ছক্কা ছাড়া এর চেয়ে বেশি রানের ইনিংস আছে কেবল একটি। ২০২০ সালে হাম্বানটোটায় ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৩৪৫ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা।
১১৭ বলে ১০ চারে ক্যারিয়ার সেরা ১৩৪ রানের ইনিংস খেলেন ফন ডাসেন। মারক্রাম ৬১ বলে ৭৭ রানের ঝড়ো ইনিংসের পর হাত ঘুরিয়ে নেন ২ উইকেট। ফিফটি আসে ইয়ানেমান মালানের ব্যাট থেকেও। রান তাড়ায় শতরানের উদ্বোধনী জুটির পর পথ হারিয়ে বসে ইংল্যান্ড। ১৯ বল বাকি থাকতে তারা অলআউট হয় ২৭১ রানে। জো রুটের ৭৭ বলে ৮৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংসে পরাজয়ের ব্যবধানই কমে শুধু। ইংল্যান্ডের ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক স্টোকস শেষটায় ছিলেন নিষ্প্রভ। বল হাতে পাননি কোনো উইকেট। ব্যাটিংয়ে ১১ বলে করেন ৫ রান।
রিভারসাইড গ্রাউন্ডে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ে নামে টস জিতে। আশা জাগানিয়া শুরু করে বিদায় নেন কুইন্টন ডি কক। স্যাম কারানের বলে বাঁহাতি ব্যাটসম্যান বোল্ড হন ২২ বলে ১৯ রান করে। দ্বিতীয় উইকেটে মালানের সঙ্গে ১০৯ রানের জুটিতে দলকে এগিয়ে নেন ফন ডাসেন। ফিফটির পরপরই মালান থামেন মইন আলির বলে ক্যাচ দিয়ে। ৭৭ বলে ৫ চারে ডানহাতি ব্যাটসম্যান করেন ৫৭ রান। এরপর তৃতীয় উইকেটে মারক্রামের সঙ্গে আরেকটি শতরানের জুটি গড়েন ফন ডাসেন। পঞ্চাশে পা রাখেন তিনি ৪৫ বলে। ৯০ বলে পূর্ণ করেন ক্যারিয়ারের তৃতীয় ওয়ানডে সেঞ্চুরি। শেষ দিকে লিভিংস্টোনের একই ওভারে বিদায় নেন দুই সেট ব্যাটসম্যানই। ভাঙে ১২২ বলে ১৫১ রানের দারুণ জুটি। ডেভিড মিলারের ১৪ বলে অপরাজিত ২৪ রানের সুবাদে ইংল্যান্ডে নিজেদের আগের সর্বোচ্চ ৩৩০ রান ছাড়িয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা।
রান তাড়ায় জেসন রয় ও জনি বেয়ারস্টোর ব্যাটে দারুণ শুরু করে ইংল্যান্ড। জমে ওঠা ১০২ রানের জুটি ভাঙেন কেশভ মহারাজ। বাঁহাতি স্পিনারের বলে লং অফে ধরা পড়েন রয় (৬২ বলে ৪৩)। ফিফটির পরপরই জীবন পান বেয়ারস্টো। তবে বেশিদূর ইনিংস টেনে নিতে পারেননি তিনি। প্রথমবার বল হাতে পেয়েই তাকে (৭১ বলে ৬৩) এলবিডব্লিউ করে দেন মারক্রাম। পরে মারক্রামেরই আর্ম বল রিভার্স-সুইপ করার চেষ্টায় এলবিডব্লিউ হন স্টোকস। জস বাটলারকে ১২ রানে নিজের ফিরতি ক্যাচে বিদায় করেন রিস্ট স্পিনার তাবরাইজ শামসি। তেমন কিছু করে দেখাতে পারেননি লিভিংস্টোন আর মইনও। তখন ১৯৯ রানে ৬ উইকেট নেই স্বাগতিকদের। কারানকে সঙ্গী করে রুট চালিয়ে যান লড়াই। ফিফটি করেন তিনি ৫০ বলে। তার ৫ চার ও ২ ছক্কায় গড়া ৮৬ রানের ইনিংসটি থামান আনরিক নরকিয়া। ইংল্যান্ড ম্যাচ থেকে পুরোপুরি ছিটকে যায় সেখানেই। শেষ ৪টি উইকেটই নেন নরকিয়া। আগামী শুক্রবার দ্বিতীয় ম্যাচ হবে ম্যানচেস্টারে।