সিলটা আমার সামনে মার

ফুলজান বিবির বাংলা

73237_sil

সময় তখন ৮.৪৫ টা। ঢাকা দক্ষিণ ১৯ নম্বর ওয়ার্ডে ইস্কাটন গার্ডেন উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রর পুরুষ ১ নম্বর বুথে দরজায় দাঁড়িয়ে আছেন দুজন আনসার। ভেতরে তখন ২০ থেকে ২৫ জনের মত লোক জটলা পাকিয়ে দাড়িয়ে আছে পুলিং অফিসারের সামনে। তাকে দ্রুত ব্যালট ছোড়ার তাগাদা দিচ্ছেন পাঞ্জাবি পরিহিত মধ্য বয়স্ক এক ব্যাক্তি। তার বুকে ঝুলছে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী সাঈদ খোকনের ব্যাচ। ওই ব্যক্তি ব্যালট নিয়ে তার সামনেই সবাইকে ভোট দিতে নির্দেশ দিচ্ছেন। ওই কক্ষে কাউন্সিলর পদে ৩ জন পুলিং এজেন্ট। তারা ৩ জনেই কাউন্সিলর প্রার্থী জাকির হোসেন (ঠেলাগাড়ি) এবং অন্য একজন প্রার্থীর (ঘুড়ি প্রতীক) এজেন্ট। তাদের সামনে কোন ভোটার তালিকা নেই। বুথে ঢুকে দেখা গেলো পাঞ্জাবি পরিহিত সেই ব্যক্তির সামনে প্রকাশ্যেই ভোট দিতে বলা হচ্ছে ভোটারদের। এমনকি নম্বর মেলানোর দায়িত্বে থাকা অফিসারকে ধমক দিতে দিতে ভূয়া ভোটারদের ব্যালট দিতে বাধ্য করছেন তিনি। একটি বুথে ২৫-৩০ জন লোকের অবস্থান এবং প্রকাশ্যে সিল মারার ব্যাপারে পাঞ্জাবি পরিহিত ওই ব্যক্তিকে জিজ্ঞাস করা হলে তিনি বলেন, ভোটারদের সহায়তা করেছি। ইচ্ছা হলে ব্যালট নিয়ে আপনিও আমার সামনে সিল দিয়ে যেতে পারে। বিষয়টি কেন্দ্রর পিজাইডিং অফিসার দুলাল চন্দ্র ভৌমিকের নজরে আনা হলে তিনি বলেন, তিনি (পাঞ্জাবি পড়া ব্যক্তি) ভোটারদের সহযোগিতা করছেন। এ কেন্দ্রের একটি বুথেও বিএনপি সমর্থিক মেয়র কাউন্সিলর এবং সংরক্ষিত কাউন্সিলর প্রর্থীদের একজনও এজেন্ট দেখা যায়নি। এসময় কেন্দ্রে ‘মওসুসের’ একজন নির্বাচন পর্যবেক্ষককে দেখা যায়। বিষয়টি তার নজরে আনা হলে তিনি বলেন, বুথের ভেতরে কি হচ্ছে সেটা দেখার বিষয় না। বাইরের পরিবেশ শান্তিপূর্ণ কিনা সেটাই বিষয়। ওই বুথে ঠেলাগাড়ি প্রতীকের ২ এজেন্ট রুবিনা বেগম ও আজমেরি বেগম জানান, ভোট শুরু হওয়ার পর থেকেই চলছে এ রকম পরিস্থিতি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *