ঢাকা: বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে তাদের মূল কারণ ছিল ধর্ম নিরপেক্ষতা। তার দালিলিক প্রমাণ রয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের পর পাকিস্তান থেকে মন্তব্য করা হয়েছিল- এটা (বাংলাদেশ) ইসলামিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশ। তার পরবর্তী সব ঘটনা আমরা জানি।
আওয়ামী লীগের প্রতি সাবধান করে বলতে চাই, নিশ্চই আমরা চাইবো সেই ঘটনা আর না ঘটুক। কিন্তু চারিদিকের যে ষড়যন্ত্র আমরা দেখছি, যাদের নিয়ে তোষামোদ করছি, যাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পাচ্ছি; তা কিন্তু তারা ঘটাবে এবং সেটি হবে অত্যন্ত নৃশংস।
শনিবার (১৬ জুলাই) জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বাংলাদেশের সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এসব কথা বলেন।
নড়াইলে অধ্যক্ষকে জুতার মালা পরানোর ঘটনা প্রসঙ্গে মেনন বলেন, আজ আমি এখানে বিক্ষুব্ধ মন নিয়ে হাজির হয়েছি। আমি মনে করেছিলাম, কিছুদিন আগে নড়াইল কলেজে যে ঘটনা ঘটেছিল, তা হয়তো ওই কলেজে দলা-দলিকে কেন্দ্র করে। কিন্তু গতকালের (ফেসবুকে মন্তব্যের জের ধরে নড়াইলে হিন্দুদের বাড়ি-ঘরে হামলা) ঘটনার পর মনে হচ্ছে পুরো বিষয়টিকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। যাতে দেশের সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি ভেঙে যায়।
দেশের বিভিন্ন এলাকায় সাম্প্রদায়িক ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভারতে নুপুর শর্মার মন্তব্যকে কেন্দ্র করে সারাবিশ্বে যে প্রতিক্রিয়া আমরা দেখলাম, তাতে বাংলাদেশে অন্তত কিছুটা সংযত আচরণ করা হচ্ছিল। কিন্তু এখন আবার আমরা একই ধরনের প্রতিক্রিয়া দেখছি এবং সঙ্গে সঙ্গে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, আমাদের অবস্থান দাঁড়িয়েছে এই যে, আমাদের শরীরে চিমটি না কাটলে আমাদের ঘুম ভাঙে না। চিমটি কাটলে হয়তো একমাস পরে আমাদের ঘুম ভাঙে। তাই এখান থেকে আমাদের একটি প্রতিবাদের জায়গা তৈরি করা প্রয়োজন। সময় অনেক গুরুত্বপূর্ণ, সময়কে অবহেলায় না কাটিয়ে ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ গড়তে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানাচ্ছি।
আলোচনা সভায় রাজশাহী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- বিশিষ্ট ইতিহাসবিদ সৈয়দ আনোয়ার হোসেন। সভায় একাত্তরের ঘাতক-দালাল নির্মূল কমিটির সভাপতি শাহরিয়ার কবীর, আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রংসহ ওয়ার্কার্স পার্টির বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।