যশোরের অভয়নগরে স্ত্রী ও দুই কন্যা সন্তানকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন জহিরুল ইসলাম বাবু নামে এক পাষণ্ড। হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় পুলিশ বাবুকে আটক করেছে।
শুক্রবার দুপুরে অভয়নগর উপজেলার চেঙ্গুটিয়া চাপাতলা গ্রামের আব্দুস সবুরের বাড়ির পিছনের কলাবাগানে এই ঘটনা ঘটে।
আটক বাবু যশোর সদর উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের বিশ্বাসপাড়ার মশিয়ার রহমান বিশ্বাসের ছেলে।
নিহতরা হলেন বাবুর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বীথি (৩০), বড় মেয়ে সুমাইয়া খাতুন (৯) ও ছোট মেয়ে সাফিয়া খাতুন (২)।
আটক বাবু পুলিশকে জানিয়েছেন, শ্বশুর বাড়ির সাথে তার বেশ কিছু দিন ধরে মনোমালিন্য চলে আসছিল। তার জের ধরে তিনি এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।
জানা যায়, শুক্রবার দুপুরের পর স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে শ্বশুর বাড়ি অভয়নগরের সিদ্দিপাশা ইউনিয়নের কলাতলা থেকে বাড়ির উদ্দেশে বের হন বাবু। জগন্নাথপুর গ্রামের বাড়িতে যাওয়ার উদ্দেশে গাড়ি থেকে চাপাতলা গ্রামে নামেন তারা। এরপর আব্দুস সবুরের বাড়ির পিছনের কলাবাগানে নিয়ে প্রথমে স্ত্রী বীথিকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। এরপরে বড় মেয়ে সুমাইয়া খাতুনকে এবং সব শেষে ছোট মেয়ে সাফিয়া খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করে বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনকে বাবু এই ঘটনা জানান। তখন বাবুর বড় ভাই মঞ্জুরুল ইসলাম বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পে ঘটনাটি জানান। এরপর বসুন্দিয়া পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ এসআই কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে বাড়ি থেকে বাবুকে আটক করা হয়।
এসআই কামরুজ্জামান জানিয়েছেন, বড় ভাই মঞ্জুরুল ইসলামের কাছ থেকে খবর পেয়ে তাদের বাড়ি থেকে বিকেলে জহিরুল ইসলাম বাবুকে আটক করা হয়। আটক বাবু প্রাথমিকভাবে স্ত্রী ও দুই মেয়েসহ তিনজনকে শ্বাসরোধে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন। সন্ধ্যায় অভয়নগর থানার এসআই মাসুদ রানা এসে বসুন্দিয়া ক্যাম্প থেকে বাবুকে নিয়ে যান।
পুলিশ শুক্রবার সন্ধ্যার পর ঘটনাস্থল থেকে লাশ তিনটি উদ্ধার করে।
এই ব্যাপারে নিহত বীথির বাবা মজিবুর রহমান বলেছেন, ১৩ বছর আগে তার মেয়েকে বাবুর সাথে বিয়ে দেয়া হয়। বিয়ের শুরু থেকেই বাবুর আচারণ সন্তোষজনক না। মাস খানিক আগে বীথি ও তার দুই মেয়ে তার বাড়িতে বেড়াতে যান বলে জানান মজিবুর রহমান। শুক্রবার বাবু তার স্ত্রী ও দুই সন্তানকে নিতে আসেন। তারা চলে যাওয়ার পর বাবুর বাবা মশিউর রহমান বিশ্বাস ফোন করে তাকে বলেন ‘আমার ছেলেকে আটক করে পুলিশে দিয়েছি। আপনারা চলে আসেন।’ এরপর সেখানে গিয়ে জানতে পারেন তার মেয়ে ও তার দুই নাতনিকে জামাই খুন করেছে। এদিনও তার বাড়িতে জামাই-মেয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয় বলে জানিয়েছেন মজিবুর।