প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত লড়াই করে গেছেন সাকিব আল হাসান। অপরাজিত থেকে হাঁকিয়েছেন ফিফটি। তবুও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩৫ রানের ব্যবধানে হারতে হলো বাংলাদেশকে। ১৯৪ রানের জবাবে নির্ধারিত ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের ইনিংস থামে ১৫৮ রানে। তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে পিছিয়ে গেল রিয়াদবাহিনী।
উইন্ডসর পার্কে রোববার (৩ জুলাই) বাংলাদেশের হয়ে ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠার একমাত্র তারার নাম সাকিব। কিন্তু ক্রিজে ১৮.৪ ওভার টিকে থাকলেও ম্যাচের ভাগ্য পরিবর্তনের নায়ক হতে পারেননি তিনি। ৫২ বল মোকাবিলায় ৬৮ রান করেন তিনি। তার ব্যাট থেকে পাঁচ চারের সঙ্গে আসে তিনটি ছক্কার মার। টাইগারদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৪ রানের ইনিংস খেলেন আফিফ হোসেন।
ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে ওবেদ ম্যাককয় ও রোমারিও শেফার্ড দুটি করে উইকেট শিকার করেন। বাকি দুই উইকেট ভাগাভাগি করে নেন ওডিন স্মিথ ও আকিল হোসেন।
পাহাড়সম লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে শুরুতেই বড় ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। প্রথম তিন ওভারে সাজঘরের পথ ধরেন তিন টাইগার ব্যাটার। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে বল করতে আসা ওবেদ ম্যাককয়ের বলে ক্যাচ তুলে দিয়ে সাজঘরে ফেরেন লিটন দাস। ৪ বল মোকাবিলায় তার ব্যাট থেকে আসে ৫ রান।
পরের বলেই বোল্ড আউট হন সাত বছর পর টি-টোয়েন্টি দলে ফেরা এনামুল হক বিজয়। তিনি ফেরেন ৪ বলে ৩ রান করে। এরপর ক্রিজে নেমে কিছুটা চড়াও হওয়ার চেষ্টা করেন মাহমুদউল্লাহ। কিন্তু বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে ওডিন স্মিথের বলে তাকে মিড অফে ধরা পরতে হয় ম্যাককয়ের হাতে। সমান এক চার ও ছক্কার মারে তার ব্যাট থেকে আসে ১১ রান।
এর পর আফিফ হোসেন এসে সাকিবের সঙ্গে ৫৫ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু তাকেও শেষ পর্যন্ত ক্রিজে স্থায়ী হতে দেননি ক্যারিবীয় বোলার শেফার্ড। ইনিংসের ১১তম ওভারে পেছনে স্কুপ করতে গিয়ে ধরা পড়েন কিপারের হাতে। তাতে ২৭ বলে থামে তার ৩৪ রানের ইনিংস। তার ব্যাট থেকে তিন চারে সঙ্গে আসে একটি ছক্কার মার।
এরপর নুরুল হাসান সোহান থিতু হতে অনেক সময় নিলেও কাজের কাজ কিছুই করতে পারেননি। বরং যখন ঝড়ের গতিতে রান দরকার ছিল সে সময় ১৩ বল মোকাবিলায় মাত্র ৭ রান করে ফেরেন সাজঘরে।
অপরপ্রান্তে থাকা সাকিবও জ্বলে উঠতে পারেননি ঠিক ঠাক। বিধ্বংসী ইনিংস খেলার বদলে ব্যাট করে গেছেন নড়বড়ে। শেষদিকে নেমে মোসাদ্দেক হোসেন তাকে সঙ্গ দিয়েছিলেন বটে। কিন্তু ততক্ষণে হার নিশ্চিত হয়ে যায় বাংলাদেশের।
স্বস্তি তখন শুধু সাকিবের ফিফটি। টাইগার অলরাউন্ডার ৪৫ বল মোকাবিলায় নিজের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে দশম ফিফটি হাঁকিয়ে নেন। এরপর ম্যাককয়কে একই ওভারে দুই ছক্কা ও এক চার হাঁকিয়ে স্বল্প সংস্করণের ক্রিকেটে স্পর্শ করেন দুই হাজার রানের মাইলফলক। মোসাদ্দেক ১০ বলে ১৫ রান করে কট বিহাইন্ড হয়ে মাঠ ছাড়েন।
এর আগে টস জিতে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে রভম্যান পাওয়েল ঝড়ে নির্ধারিত ওভার শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে ১৯৩ রানের বড় সংগ্রহ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পাওয়েল ২৮ বল মোকাবিলায় ৬ ছক্কা ও এক চারের মারে ৬১ রানে অপরাজিত থাকেন। উইন্ডসর পার্কে এদিন পাওয়েল ছাড়াও ৫৭ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেন ওপেনার ব্রানডন কিং।
তার ৪৩ বলের ইনিংসটি সাজানো ছিল সাত চার ও এক ছক্কার মারে। এছাড়া অধিনায়ক পুরানের ব্যাট থেকে আসে ৩৪ রান। মোসাদ্দেককে স্লোগ সুইপ খেলতে গিয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়েন পুরান। ৩০ বল মোকাবিলায় তিন চার ও এক ছক্কার মারে নিজের ইনিংসটি সাজান পুরান।
টাইগার বোলারদের মধ্যে ৪০ রান খরচায় সর্বোচ্চ ২ উইকেট শিকার করেন শরিফুল ইসলাম। এছাড়া একটি করে উইকেট শিকার করেন মেহেদী হাসান, সাকিব আল হাসান ও মোসাদ্দেক হোসেন।
এদিন উইকেটশূন্য তাসকিন ছিলেন বেশ খরুচে। মাত্র ৩ ওভার বল করে দেন খরচ করেন ৪৬ রান। উইকেটের দেখা পাননি কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমানও। ৪ ওভার বল করে তিনি খরচ করেন ৩৭ রান।