দেশের বিভিন্ন জেলায় চলমান বন্যায় এখন পর্যন্ত ৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে সিলেট বিভাগে। জেলা হিসাবে বেশি মানুষ মারা গেছে সুনামগঞ্জে। শনিবার (২ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন ও কন্ট্রোল রুম এ তথ্য জানিয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, ১৭ মে থেকে ২ জুলাই পর্যন্ত সিলেট, ময়মনসিংহ ও রংপুর বিভাগে বন্যায় ৯৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে সিলেট বিভাগে ৫৬ জন, ময়মনসিংহে ৩৩ ও রংপুর বিভাগে ৫ জন।
জেলা হিসাবে সুনামগঞ্জে সবচেয়ে বেশি ২৮ জন মারা গেছেন। সিলেট জেলায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। অন্যদিকে ময়মনসিংহ বিভাগের মধ্যে নেত্রকোনায় ১১ জন ও জামালপুরে ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি এখনো সামাল দেয়া সম্ভব হয়নি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় জেলা সিলেটে। বন্যার পানি ধীরে ধীরে নামলেও এখনো অনেকে আশ্রয়কেন্দ্রে রয়েছেন।
এরইমধ্যে বন্যায় সিলেটে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠিয়েছে সিলেট জেলা প্রশাসন।
সিলেট নগরীর উপশহর এলাকার বাসিন্দা ফয়ছাল আহমদ জানান, সিলেটে ১২২ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে। এবারের হঠাৎ বন্যায় থমকে যায় সিলেট অঞ্চল। কেবল খাদ্য, পানি ও আশ্রয়ের সংকটই ছিল না; বিদ্যুৎ সংকট মারাত্মক রূপ নিয়েছিল, বন্ধ হয়ে গিয়েছিল মোবাইল নেটওয়ার্ক। চার্জ নিতে না পারায় অনেকে মোবাইল ফোন ব্যবহার করতে পারেননি।
সিলেটের জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. মজিবুর রহমান বলেন, বন্যায় সিলেট জেলার প্রায় ৪০ হাজার ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যার পানি এখনো পুরাপুরি নেমে যায়নি। তবে যেসব এলাকায় পানি নেমে যাচ্ছে, সেসব এলাকায় ঘরবাড়ি মেরামতের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তালিকা পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে অনুদান আসলে যত সম্ভব তাড়াতাড়ি তা সবার কাছে তা পৌঁছে দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
সিলেট ছাড়াও বন্যায় মারাত্মক ক্ষতি হয়েছে সুনামগঞ্জ, মৌলভীবাজার, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, গাইবান্ধা, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, টাঙ্গাইল ও সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা।