তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে জয়ের জন্য পাকিস্তানের দেওয়া ২৪০ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করছে বাংলাদেশ। মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ১৪ ওভার শেষে ২ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১০০ রান।
দলীয় ২২ রানে উইকেট কিপার সরফরাজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে গেছেন উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সৌম্য সরকার। জুনাইদ খানের বলে আউটের আগে ১১ বলে ১৭ রান করেছেন সৌম্য।
সৌম্যর আউটের পর রুদ্রমূর্তি ধারণ করেন অপর ওপেনার তামিম ইকবাল। ১৩ চারের সৌজন্যে মাত্র ৪৬ বলে ৬০ রান করে অপরাজিত আছেন গত ম্যাচে সেঞ্চুরি করা এ ব্যাটসম্যান। ২৮ বলে ১৭ রান করে সাঈদ আজমলের বলে ফিরে গেছেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।
তামিমের সঙ্গে ক্রিজে আছেন মুশফিকুর রহিম।
এর আগে রোববার টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ইনিংসে শুরুতেই বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে পড়ে পাকিস্তান। অধিনায়কের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণ করে দলীয় ৭৭ রানে টপ অর্ডারের ৫ ব্যাটসম্যান আউট হন। এর পর সাদ নাসিমকে সঙ্গে নিয়ে ৭৭ রানের জুটি গড়েন হারিস সোহেল। অধিনায়ক মাশরাফির করা ৩৯তম ওভারের শেষ বলে ফিরতি ক্যাচ দিয়ে সাজঘরের পথ ধরেন হারিস। সাদ তখন ৬০ রানে অপরাজিত।
হারিস আউটের পর উইকেটে আসেন পেসার ওয়াহাব রিয়াজ। তাকে সঙ্গে নিয়ে শেষ পর্যন্ত লড়ে যান সাদ। ৫০ ওভার শেষে পাকিস্তানের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২৩৯ রান। সপ্তম উইকেট জুটিতে ৬৬ বলে ৮৫ রান সংগ্রহ করেন ওয়াহাব ও সাদ।
৯৬ বলে ৭৭ রান করে অপরাজিত থাকা সাদ নাসিমের দৃঢ়তা আর ওয়াহাব রিয়াজের ৪০ বলে ৫১ রানের সময়োপযোগী অর্ধ-শতক পাকিস্তানকে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেয়। এ দু’জনের ব্যাটিংয়ের সুবাধে শেষ ৫ ওভারে ৪৯ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান।
১০ ওভারে ৫১ রান দিয়ে ২ উইকেট পাওয়া সাকিবই আজ বাংলাদেশের সফল বোলার। এছাড়া মাশরাফি, নাসির, রুবেল ও আরাফাত একটি করে উইকেট পেয়েছেন। ৭৭ রান করে পাকিস্তানের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে সর্বোচ্চ সংগ্রাহক সাদ নাসিম। ওয়াহাব রিয়াজের ৫২ ছাড়াও ওপেনার আজহার আলি ৩৬ এবং মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হাসির সোহেলের ৪৪ রানই বলার মতো স্কোর।
এর আগে রোববার দুপুর আড়াইটায় ঢাকার মিরপুর শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ম্যাচটি শুরু হয়।
ইনিংসের অষ্টম ওভারে বোলিংয়ে এসে নিজের প্রথম বলেই আঘাত হানেন বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসেন। রুবেলের করা প্রথম বলে সৌম্য সরকারের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন পাকিস্তানের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান সরফরাজ। তিনি করেন ৭ রান।
পরের ওভারেই মোহাম্মদ হাফিজকে পরিষ্কার বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফেরত পাঠান বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি। রানের খাতায় শূন্য নিয়েই মাঠ ছাড়তে হয় হাফিজকে।
এরপর ১৬তম ওভারে বোলিংয়ে এসে পাকিস্তানের অধিনায়ক আজহার আলিকে ফেরান। ওই ওভারে তৃতীয় বলে উইকেট রক্ষক মুশফিকুর রহিমের হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেওয়ার আগে আজহার করেন ৩৬ রান।
পরের ওভারে বোলিংয়ে এসেই কোনো রান করা ফাওয়াদ আলমকে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরত পাঠান নাসির হোসেন।
ইনিংসের ২২তম ওভারে বোলিংয়ে এসে পাকিস্তান ইনিংসে আবারও আঘাত হানেন অলরাউন্ডার সাকিব। এবার তার শিকার মোহাম্মদ রিজওয়ান। ওভারের তৃতীয় এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরার আগে তিনি করেন ১৩ রান।
বিশ্বকাপে স্লো ওভার রেটের কারণে এক ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে এই ম্যাচে দলে ফিরেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। আর বাদ পড়েছেন পেসার আবুল হাসান।
শুক্রবার মিরপুরে প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ৭৯ রানে হারিয়ে সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে টাইগাররা।
বাংলাদেশ দল: তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিম (উইকেট রক্ষক), সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান, মাশরাফি বিন মর্তুজা (অধিনায়ক), আরাফাত সানি, রুবেল হোসেন এবং তাসকিন আহমেদ।
পাকিস্তান দল: মোহাম্মদ হাফিজ, আজহার আলি (অধিনায়ক), হারিস সোহেল, সাদ নাসিম, মোহাম্মদ রিজওয়ান, ফাওয়াদ আলম, সরফরাজ আহমেদ (উইকেট রক্ষক), ওয়াহাব রিয়াজ, জুনাইদ খান, সাঈদ আজমল এবং রাহাত আলি।