বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ যখন সংসদে বক্তব্য রাখবেন তখন তাকে বাধা দেওয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছেন বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা।
বুধবার একাদশ জাতীয় সংসদের অষ্টাদশ অধিবেশনে অর্থ বিলের ওপর আলোচনাকালে দুই নেতার বাহাসে এক পর্যায়ে এ হুমকির ঘটনা ঘটে।
এর আগে এক অধিবেশনেও বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনের বক্তব্যে নাখোশ হয়ে বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ রাঙ্গা সংসদের লবিতে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটলে তিনি দায়ী থাকবেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন।
অর্থ বিলের সংশোধনীর ওপর আলোচনাকালে বিএনপি দলীয় সদস্য হারুন তার বক্তব্যে স্পিকারের বিরুদ্ধে সময় না দেওয়ার অভিযোগ তুলে বলেন, সরকারি দলের সদস্যদের অনির্ধারিত বক্তব্য দেওয়ার সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু আমাদের সময় বাড়িয়ে দিতে আপনি ডিফেন্সিভ থাকেন। বাজেটের ওপর মাসব্যাপী এ আলোচনায় বাজেট নিয়ে খুবই কম কথা হয়েছে। পুরো কথা হয়েছে পদ্মা সেতু নিয়ে।
স্পিকারের বিরুদ্ধে সময় কম দেওয়ার অভিযোগ তুলে হারুন বলেন, বিশেষ অধিকারের নোটিশে সময় বেঁধে দিয়েছেন দুই মিনিট। এটা অতীতে হয়নি।
আগের দিন সরকার দলীয় সদস্য মমতাজ বেগমের বক্তব্যের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে হারুন বলেন, আমরা মাত্র কয়েকজন সদস্য। আমরা কথা বলতে গেলে এত যদি আপত্তি ও বাধা থাকে তাহলে বলেন, আমরা সংসদ ছেড়ে চলে যাই। সংসদে কথা বলার পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে আপনাকে।
তার এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্পিকার বলেন, এক মিনিট কেন আপনাকে চার মিনিট সময় দেওয়া হয়েছে। কথা বলার সময় তো খেয়াল থাকে না। আপনাদের প্রাপ্য সময়ের তুলনায় বেশি সুযোগ দেওয়ার চেষ্টা করি। আপনি যে কথাগুলো বলেছেন, সেটা ভেবে বলা প্রয়োজন।
পরে রাঙ্গা তার বক্তব্যে স্পিকারকে সুন্দরভাবে সংসদ পরিচালনার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, একজন বিরোধী দলীয় সদস্য আপনাকে কটাক্ষ করে বক্তব্য দিয়েছেন। অন্য কোনো স্পিকার হলে তার মাইক বন্ধ করে দিতেন। আমি এটা ২০০১ সালে দেখেছি। পদ্মা সেতু নিয়ে কেন তাদের এত গাত্রদাহ!
তিনি বলেন, আমরা বিরোধী দল থেকে চাইব, সরকারকে উৎখাত করতে। কিন্তু আল্লাহ না চাইলে কীভাবে উৎখাত করব? প্রধানমন্ত্রী এখন দেশের সবচাইতে জনপ্রিয় ব্যক্তি। পদ্মা সেতুতে এমন জনপ্রিয়তা বেড়েছে যাতে বিএনপির মতো জাতীয় পার্টিকে থালা নিয়ে রাস্তায় নামতে হবে।
এ সময় মাইক ছাড়াই হারুন টিপ্পনী কেটে বলেন, এখন সময় বাড়িয়ে দেন। এর জবাবে রাঙ্গা বলেন, আপনাকে কি চিফ হুইপের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে? তিনি স্পিকারের উদ্দেশে বলেন, আমি দুঃখ প্রকাশ করে বলছি, উনি যখন কথা বলবেন আমি কিন্তু কথা বলব, ওনাকে কথা বলতে দেব না।
পরে সংশোধনী আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির হারুন বলেন, এখানে অনেক বিষয় এসেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী এমন দলকে বিরোধী দলে এনেছেন। আমি জীবনেও এ ধরনের আলোচনা শুনিনি। যে ধরনের হুমকি ধমকি দেওয়া হচ্ছে। আমি সত্যি আতঙ্কিত। এ সংসদে সাড়ে তিনশ সদস্যের মধ্যে আমরা মাত্র কয়েকজন। এত যদি হুমকি ধমকি দেন আমরা তো চ্যাপ্টা নয় ভর্তা হয়ে যাব। এ পরিস্থিতি থেকে আমাদের সুরক্ষা দেওয়া ব্যবস্থা করেন। বাইরের পারসেপশন এটা এককেন্দ্রিক সংসদ হয়ে গেছে। এভাবে পার্লামেন্ট হয় না।