নিত্যপণ্যের মূল্য স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে: প্রধানমন্ত্রী

Slider অর্থ ও বাণিজ্য


ঢাকা: ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে সংসদ অধিবেশনে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের গৃহীত পদক্ষেপের ফলে নিত্যপণের মূল্য স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে বলেও জানান তিনি।

বুধবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বিরোধী দলের সংসদ সদস্য সৈয়দ আবু হোসেনের এক প্রশ্নের লিখিত উত্তরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ কথা জানান। এ দিন প্রশ্নোত্তর পর্ব টেবিলে উপস্থাপিত হয়। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ভাইরাস অতিমারির কারণে বিশ্বব্যাপী খাদ্যপণ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সকল দ্রব্যসামগ্রীর উৎপাদন ও সরবরাহ হ্রাস পায়। উপরোন্তু রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। যুদ্ধের কারণে উৎপাদন ও সরবরাহ ব্যবস্থার অবনতি ঘটে বিধায় সমগ্র বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি দেখা দেয় এবং নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পায়। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাংলাদেশে দ্রব্যসামগ্রীর উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সরবরাহ অব্যাহত রাখা সম্ভব হচ্ছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মে ২০২২ মাসে বৃটেনে মুদ্রাস্ফীতি ছিল ৯%, যুক্তরাষ্ট্রে ৮%, ভারতে ৭.৯% এবং তুরস্কে ৫৪.৮%। এ সময়ে বাংলাদেশে খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি বেড়ে হয়েছে ৭.৪২% এবং গড় মূল্যস্ফীতি ৬.২%। আমরা চেষ্টা করছি অর্থনীতির চাকা সচল রেখে দ্রব্যমূল্যের দাম সহনীয় রাখতে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বর্তমান সরকার দেশে ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর মূল্য জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে রাখার লক্ষ্যে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে।

ভোজ্যতেলের মূল্য বৃদ্ধির কারণ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে ভোজ্যতেলের বার্ষিক চাহিদা প্রায় ২০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে দেশে উৎপাদন হয় মাত্র ২ লাখ মেট্রিক টন। অবশিষ্ট ১৮ লাখ মেট্রিক টন ভোজ্যতেল আমদানি করে ভোক্তা সাধারণের চাহিদা পুরণ করা হয়। তাই আমদানি নির্ভর এ ভোজ্যতেলের আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধি পেলে দেশীয় বাজারেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। যুদ্ধ, বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাসসহ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণেও পণ্যের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে কম হলে ঘাটতি দেখা দেয়।

এছাড়া বাংলাদেশ যেসব দেশ থেকে ভোজ্যতেল আমদানি করে থাকে সেই সব দেশে কোনো কারণে পণ্য আমদানিতে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে দেশীয় বাজারে এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। আর এ কারণেই ভোজ্যতেলের বাজার অস্থিতিশীল হয়ে থাকে।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সাম্প্রতিককালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে রাশিয়া ও ইউক্রেন থেকে পণ্য আমদানিতে সংকট তৈরি হয়েছে। তাই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে আমদানি নির্ভর পণ্যের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। একই কারণে সাম্প্রতিক সময়ে ভোজ্যতেলের মূল্যও বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সরকারের গৃহীত কার্যক্রমের ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মুল্য স্থিতিশীল হতে শুরু করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *