নববর্ষের দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় নারীকে যৌন হয়রানির ঘটনায় নিন্দার ঝড় উঠেছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচার চেয়েছেন৷ নির্বাসিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন অবশ্য বলছেন ভিন্ন কথা৷ ভারতে নির্বাসিত বাংলাদেশি সংগীত শিল্পী তসলিমা নাসরিন দুদিন আগে জানান যে তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিজেবল করে দিয়েছে ফেসবুক৷ তবে বৃহস্পতিবার অ্যাকাউন্টটি ফেরত পেয়েছেন তিনি৷ আর তারপরই মন্তব্য করছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় যৌন হয়রানি নিয়ে৷ তিনি লিখেছেন, শ্লীলতাহানি তো পুরুষেরও হতে পারে, মেয়েদের হলে চারদিকে কান্নাকাটির রোল পড়ে কেন? এর মানে কি এই যে পুরুষের শ্লীলতাটা বজায় না রাখলেও চলে, কিন্তু মেয়েদেরটা মাস্ট?
বিভিন্ন সময় লেখালেখির জন্য আলোচিত, সমালোচিত তসলিমা তাঁর ফেসবুক পোস্টের শেষাংশে লিখেছেন, এই সমাজ একটা মেয়েকে তৈরি করে পুরুষের খাদ্য হিসেবে, এবং একটা পুরুষকে তৈরি করে মেয়েদের খাদক হিসেবে৷ এই তৈরি করায় কারো আপত্তি নেই৷ কিন্তু পুরুষরা জনসমক্ষে মেয়েদের খেতে গেলেই আপত্তি. অবশ্য একটু আড়ালে, একটু নাটক করে, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে, কায়দা করে খেলে আপত্তি নেই৷ এই ভণ্ডামিটা হয়ত আরো কয়েকশ বছর চলবে৷
প্রসঙ্গত, যৌন হয়রানি চলাকালে পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে৷ অভিযোগ রয়েছে, পুলিশ ইচ্ছাকৃতভাবে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে৷ সাংবাদিক গোলাম মোর্তোজা এই বিষয়টি তুলে এনেছেন তাঁর ফেসবুক পোস্টে৷ তিনি লিখেছেন, ছাত্র ইউনিয়নের সহ-সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন বলেন, ..ঘটনাস্থল থেকে আমরা দুজনকে ধরিয়ে দিয়েছিলাম৷ কিন্তু পুলিশ পরে তাঁদের ছেড়ে দিয়েছে বলে জানতে পারি৷ পুলিশ কেন ছেড়ে দিল, পয়সার বিনিময়ে না রাজনৈতিক কারণে? পুলিশ যারা পরিচালনা করেন, তারা কি প্রশ্নটির জবাব দেবেন?
কমিউনিটি বাংলা ব্লগ সামহয়্যার ইন ব্লগে এই বিষয়ে লিখেছেন একাধিক ব্লগার৷ ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র সংগঠনের দিকে আঙুল তুলে ব্লগার এম এ আহাদ লিখেছেন, …১৯৭৩ সালে শহীদ মিনারে ছাত্রীদের হামলে পড়ার সাথে ছাত্রলীগের নাম জড়িয়ে আছে৷ তাদের বর্তমান উত্তারাধিকারীরা সেই ধারাবাহিকতা এখনও বজায় রেখেছে৷
উল্লেখ্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের যৌন হয়রানির ঘটনায় বৃহস্পতিবার স্বতপ্রণোদিত হয়ে রুল দিয়েছে হাইকোর্ট৷ ঘটনার জন্য দায়ীদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে আদালত৷